চান্দিনায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৩ দোকান পুড়ে ছাই।

চান্দিনায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৩ দোকান পুড়ে ছাই।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঙলা কাগজ; চান্দিনা (কুমিল্লা) : কুমিল্লার চান্দিনা বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৮ জন মালিকের ৪৩টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলা সদরের মধ্য বাজারে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ভোর ৫টার দিকে। ততোক্ষণে ৪৩টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

আবার এসব দোকানের পাশাপাশি ফুটপাথে থাকা অন্তত ২০টিরও বেশি ক্ষুদ্র দোকানও পুড়ে গেছে। ঈদের ঠিক একদিন আগে এই আগুনের ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।  

এ ঘটনায় শনিবার (৯ জুলাই) সকালে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের খোঁজ-খবর নিতে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। এ সময় প্রত্যেক ব্যবসায়ীর তালিকা তৈরি করে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত সকলকে ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করেন।

সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল হক মীর, পৌর মেয়র শওকত হোসেন ভূঁইয়াসহ উপজেলা ও পৌরসভার কর্তকর্তারা এসে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করেন।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, চান্দিনা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী বিমল নন্দি দোকানের ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে বাকরুদ্ধ। কারও কোনও কথারই জবাব দিচ্ছেন না। হঠাৎ বুকফাটা চিৎকার করে বলে উঠলেন, ‘শুধু ক্যাশের মধ্যেই নগদ ১০ লাখ টাকা ছিলো। আজকের শেষ বেচাটা বেচতে পারলেও তো হইতো।’ 

চান্দিনার চাল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাউন্সিলর দুলাল মিয়া বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, অগ্নিকাণ্ডে আমার ৩টি দোকান পুড়ে অন্তত ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঈদের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে প্রতিটি দোকানই মালামালে ভরপুর ছিলো। শনিবার চাঁদরাতে বেচাকেনা করার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা।  

বাজারের মুদি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাহারুল ইসলাম বাহার বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, বাজারের যে অংশটিতে আগুন লেগেছে, তার পুরো অংশটি পৌরসভার নির্মিত চালবাজার। এ বাজারের ৪৩টি দোকানের মধ্যে ১৯টি দোকানই মুদি ব্যবসায়ীদের। বাকিগুলোতে চাল ও অন্যান্য দোকান রয়েছে। ৪৩টি দোকানের আশপাশে ফুটপাথে রয়েছে অন্তত ২০টির মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকান। আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

চান্দিনা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার অনয় কুমার ঘোষ বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, ‘আমাদের দুটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আশপাশের মার্কেটগুলোতে যাতে আগুন ছড়িয়ে পরে, আমরা সেই চেষ্টাও করেছি।’  

সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সকল ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর কথা শুনে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করতে পৌরসভাকে নির্দেশ প্রদান করেন চান্দিনার সাংসদ অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই উপস্থিত ছিলেন।