চট্টগ্রামে কুকুর লেলিয়ে হিমু হত্যা : ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

চট্টগ্রামে কুকুর লেলিয়ে হিমু হত্যা : ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় এক দশক আগে চট্টগ্রামে কুকুর লেলিয়ে ছাদ থেকে ফেলে শিক্ষার্থী হিমাদ্রী মজুমদার হিমুকে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজনের সর্বোচ্চ সাজা বহাল রেখে দুজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি খন্দকার দিলিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা তিন আসামি হলেন : জাহিদুর রহমান শাওন, জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ ও মাহবুব আলী ড্যানি। তাঁদের মধ্যে শাওন জামিন নিয়ে এবং রিয়াদ মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

জজ আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া শাহ সেলিম টিপু ও শাহাদাত হোসেন সাজুকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. হারুন অর রশীদ, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরু, মিজানুর রহমান খান, মো. আলতাফ হোসেন আমানী এবং হুমায়ূন কবির। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ, মোহাম্মদ ইয়াছির সিকদার, মো. কামাল পারভেজ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় ২০১২ সালের ২৭ এপ্রিল বন্দরনগরীর পাঁচলাইশ এলাকার সামারফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে হিমুকে ধরে নিয়ে যায় আসামি শাওন, রিয়াদসহ কয়েকজন। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সদ্য ‘এ’ লেভেল পাস করা হিমুর বয়স তখন ১৮ বছর।

আসামিরা তাঁকে ধরে পাঁচলাইশ এলাকায় রিয়াদের বাবা ব্যবসায়ী টিপুর বাড়ির ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে মারধরের পর হিংস্র কুকুর লেলিয়ে ও ধাক্কা দিয়ে তাঁকে ফেলে দেওয়া হয় ছাদ থেকে।

হাসপাতালে ২৬ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর ওই বছরের ২৩ মে মৃত্যু হয় হিমুর। ওই ঘটনায় হিমুর মামা শ্রী প্রকাশ দাশ বাদি হয়ে শাওন, রিয়াদ, সাজু, ড্যানি ও রিয়াদের বাবা ব্যবসায়ী শাহ সেলিম টিপুকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।

২০১৬ সালের ১৪ অগাস্ট চাঞ্চল্যকর এ মামলার পাঁচ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেন চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নুরুল ইসলাম।

পরে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের নিয়ম অনুযায়ী, ওই বছরই মামলার সব নথিপত্র আসে হাইকোর্টে। এদিকে দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল করেন আসামিরা। দীর্ঘদিন পর এ মামলার শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দিলো হাইকোর্ট।