গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির প্রতিবেদন : ১ বছরেই গড়ে পাচার ৬৪ হাজার কোটি টাকা।

গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির প্রতিবেদন : ১ বছরেই গড়ে পাচার ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : এই প্রাণের বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে পাচার হচ্ছে ৬৪ হাজার কোটি টাকা। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতি বছর দেশের এসব টাকা পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও থাইল্যান্ডসহ ১০টি দেশে। আমদানি-রপ্তানিসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কারসাজি আর হুন্ডির আড়ালে এসব অর্থপাচার করছে পাচারকারী সিন্ডিকেট। এমনটাই বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ পাচার মনিটরিং সংস্থা- বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ)। আর গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি বলছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৬৪ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২০- এই ৫ বছরে পাচারকারীরা ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে গেছেন। যার মধ্যে শুধু ২০১৫ সালে ১ বছরেই দেশ থেকে পাচার হয়ে যায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। পাচারকৃত টাকার পরিমাণ বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের সাড়ে ১৭ শতাংশই কোনও না কোনোভাবে পাচার হচ্ছে বলে দাবি আন্তর্জাতিক এ সংস্থার। ‘বিদেশে টাকা পাচার রোধ, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে আর পাচারকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার একযোগে কাজ করছে রাষ্ট্রের ৮টি সংস্থা। তবুও কেনো ঠেকানো যাচ্ছে না পাচার? কিংবা ফেরত আনা যাচ্ছে না দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ?’ এমন প্রশ্নের জবাবে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কৌঁসুলি খুরশিদ আলম বলেন, ‘সংসদ সদস্য, বড় ব্যাংকার থেকে শুরু করে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা পাচারের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের ক্ষমতা এবং প্রভাবের কারণে এই অপরাধ বন্ধ করা যাচ্ছে না।’ ‘কাগজে-কলমে ব্যাংকিং খাত এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি আছে। কিন্তু সেই নজরদারি যথেষ্টভাবে সক্ষমতার সঙ্গে কাজ করছে না।’ খুরশিদ আলম আরও বলেন, টাকা পাচারের মাধ্যমে পুরো দেশকে আর্থিকভাবে অচল করে দেওয়া হচ্ছে, পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে। ‘যাঁরা টাকা পাচার করছে, তাঁদের কয়েকজনকে যদি উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে পরবর্তীতে সবাই টাকা পাচার করতে ভয় পাবে।’ ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪ বছরে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার তথ্য প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।