খাদ্যমন্ত্রী : চালকলমালিক, ধান ব্যবসায়ী ও বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান ধান মজুদ করছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশের বেশির ভাগ মিলমালিক বাজার থেকে ধান কিনলেও উৎপাদনে যাচ্ছেন না। বাজারে নতুন চাল এখনো আসছে না। এখন বাজারে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে, তা গত বছরের পুরোনো চাল। তাহলে নতুন ধান যাচ্ছে কোথায়? এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছেন, মিলমালিকদের এ অবস্থা চলতে দেওয়া হবে না। কে কী পরিমাণ ধান কিনছেন এবং কে কী পরিমাণ চাল ক্রাশ করছেন বা ভাঙছেন এবং বাজারে ছাড়ছেন, তা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন আকারে প্রেরণ করতে হবে।
রোববার (২৯ মে) সচিবালয়ে নিজ অফিসকক্ষে ‘বোরো ২০২২ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও বাজার মনিটরিং–সংক্রান্ত অনলাইন মতবিনিময় সভায়’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন কর্পোরেট হাউস ধান–চালের ব্যবসা শুরু করেছে। তারা বাজার থেকে ধান কিনে মজুদ করছেন এবং প্যাকেটজাত করছেন। প্যাকেটজাত চাল বেশি দামে বাজারে বিক্রিও হচ্ছে। এ সময় ধান–চালের ব্যবসায় সম্পৃক্ত করপোরেট হাউসগুলোর সঙ্গে দ্রুততম সময়ে বৈঠক করতে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে ধান কিনে মজুদ করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সবাই প্রতিযোগিতা করে ধান কিনছেন, ভাবছেন ধান কিনলেই লাভ। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা ভালো পরিণতি আনবে না বলে সতর্ক করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
ভারত থেকে গম দেওয়া বন্ধ হচ্ছে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। অথচ শুধু ভারত নয়, বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশকে গম দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েছে বলে উল্লেখ করেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, বোরো সংগ্রহ সফল করতে হবে, পাশাপাশি বাজার মনিটরিং চালিয়ে যেতে হবে। কেউ যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে উল্লেখ করে মিন্ত্রী বলেন, কে কোন দল করে সেটি বিবেচ্য নয়। কেউ চালের বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উত্তরাঞ্চলে ঝড় ও বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। কোন জেলায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার সঠিক হিসাব জানা জরুরি। উৎপাদনের হিসাব ও ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা না গেলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে না। এ সময় সঠিক তথ্য প্রেরণের জন্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
নওগাঁ ধান ও চাউল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যসংকট তৈরি হবে, এমনটা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। ফলে অনেকেই ভাবছেন, আমাদের দেশে চালের সংকট তৈরি হবে। সে কারণে অনেকেই অবৈধভাবে চাল মজুদ করছেন।’ এ ধরনের অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।