কলম্বিয়ায় মার্কিন দূতাবাসে হাভানা সিনড্রোমের হানা!

কলম্বিয়ায় মার্কিন দূতাবাসে হাভানা সিনড্রোমের হানা!
ডন প্রতিবেদন : ফের আলোচনায় ‘হাভানা সিনড্রোম’। এবার সেই সিনড্রোম (লক্ষণ) দেখা দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় মার্কিন দূতাবাসে। এখানকার বেশ কয়েকজন কর্মী রহস্যজনক অসুস্থতায় ভোগার পর সম্ভাব্য সেই ঘটনার তদন্ত করে দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। খবর বিবিসির। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বুধবার (১৩ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, কলম্বিয়ার রাজধানি বোগোটায় মধ্য সেপ্টেম্বরের পর সেখানকার মার্কিন দূতাবাসের কর্মীরা রহস্যজনক কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের কানে যন্ত্রণাদায়ক তীব্র শব্দ, অতিশয় ক্লান্তি ও মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দেশটি সফরে যাওয়ার আগে এ ঘটনা ঘটলো। ২০১৬ সালে প্রথম কিউবার রাজধানি হাভানায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দূতাবাসের কর্মীদের মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা দেয়। মাথা ঘোরা, ভারসাম্যহীনতা, কানে কম শোনা, স্মৃতি হারানো ও দুশ্চিন্তার মতো লক্ষণের কথা তখন বলা হয়েছিলো। পরে এটা ‘হাভানা সিনড্রোম’ নামে পরিচিতি পায়। যদিও এ ধরনের রহস্যজনক অসুস্থতার কারণ অজানা। গতকাল মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রথম কলম্বিয়ার মার্কিন দূতাবাসে ‘হাভানা সিনড্রোম’ হানা দেওয়ার খবর প্রকাশ করে। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, কলম্বিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ফিলিপ গোল্ডবার্গ কিছু ই-মেইল পাঠিয়ে মধ্য সেপ্টেম্বরের পর থেকে দূতাবাসের কর্মীদের ‘অজানা স্বাস্থ্যগত সমস্যা’ বা হাভানা সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভান দুকে নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, তাঁর দেশ ‘হাভানা সিনড্রোম’-সংক্রান্ত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখছে। তবে এ-সংক্রান্ত তদন্তে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দিচ্ছে। যেসব মার্কিন এই রহস্যজনক অসুস্থতায় পড়েন, তাঁদের কানে তীব্র ও বেদনাদায়ক শব্দ হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ২শ মার্কিন এ সমস্যার শিকার হয়েছেন। তাঁদের অনেকে মাসের পর মাস মাথা ঘোরা ও ক্লান্তিতে ভোগার কথা জানিয়েছেন। গত শুক্রবার (৮ অক্টোবর) জার্মানির বার্লিনে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসেও ‘হাভানা সিনড্রোমে’ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এর কারণ ও এর পেছনে কারা দায়ী, তা খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ খবর এমন এক সময় এলো, যার কয়েক ঘণ্টা আগে এ রকম ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন কর্মীদের ক্ষতিপূরণ দিতে একটি আইনে সই করেন বাইডেন। বোগোটায় হাভানা সিনড্রোমের বিষয়টি মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বিবিসির কাছে নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানালেও পরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, ‘যেখানেই অজানা স্বাস্থ্যগত সমস্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে, আমরা সবকটিরই জোর তদন্ত চালাচ্ছি। এসব ঘটনার কারণ শনাক্ত এবং বিদেশি কেউ এতে জড়িত আছেন কি-না, তা বের করতে কাজ চলছে।’ আসছে সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বোগোটা সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে।