ইভ্যালির বোর্ডের জন্য আদালতে সাবেক তিন সচিবের নাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের

ইভ্যালির বোর্ডের জন্য আদালতে সাবেক তিন সচিবের নাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
ডন প্রতিবেদন : প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আলোচনায় থাকা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি লিমিটেড ব্যবস্থাপনায় বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে সাবেক তিনজন সচিবের নাম আদালতে প্রস্তাব করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবার (১৩ অক্টোবর) তিনজন অবসরপ্রাপ্ত সচিবের নাম দাখিলের কথা বলেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। ইভ্যালির দুজন সদস্যই (চেয়ারম্যান ও সিইও) কারাগারে থাকায় ওই মামলার শুনানিতে গতকাল মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) একই বেঞ্চ ইভ্যালির বিষয়ে চার সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেওয়ার কথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইনজীবীকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবেরসঙ্গে কথা বলে বর্তমান বা সাবেক সচিব, অতিরিক্ত সচিব- এমন তিনজনের নাম দিতে বলেন। এরমধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে একজনের নাম চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে আদালত বুধবার (১৩ অক্টোবর) আদেশের জন্য দিন রাখেন। আজ (বুধবার : ১৩ অক্টোবর) আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন, কথা বলে অবসরপ্রাপ্ত তিনজন সচিবের নাম দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেন, কর্মরত সচিবদের নামও দেন, শুধু অবসরপ্রাপ্ত কেন? আইনজীবী তাপস বলেন, অনুমতি পেলে হলফনামা করে দাখিল করা যাবে। আদালত অনুমতি দেন। একপর্যায়ে আদালত বলেন, নামগুলো পেতে হবে, যাচাই-বাছাই করতে হবে। মন্ত্রণালয় ভালো লোকের নাম দেবে আশা করি। যাচাই-বাছাই করে চেষ্টা করবো, তুলনামূলক ভালো ও সততা নিয়ে প্রশ্ন আসবে না- এ রকম লোককে দিতে। পরবর্তী তারিখ (১৮ অক্টোবর) আদেশের জন্য রাখা হলো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে তিনজন অবসরপ্রাপ্ত সচিবের নাম রয়েছে। তাঁরা হলেন : অবসরপ্রাপ্ত সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী (ভূমি মন্ত্রণালয়), অবসরপ্রাপ্ত সচিব রেজাউল আহসান (স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগ) ও অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী (ভূমি সংস্কার বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান)। এর আগে আদালত বলেছিলেন, বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানে চারজনের বোর্ডই হতে পারে। সাবেক বিচারপতি, সচিব ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসহ চারজন রাখা যেতে পারে। গত মে মাসে ইভ্যালিতে ইলেকট্রনিকস পণ্য অর্ডারের পর অর্থ পরিশোধ করে পণ্য ও টাকা না পেয়ে কোম্পানিটির অবসায়ন চেয়ে গ্রাহক ফরহাদ হোসেন গত ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন। এতে ইভ্যালি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য বোর্ড গঠনের আরজিও জানানো হয়। আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর একই বেঞ্চ ইভ্যালির ওপর তাদের সব সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তর থেকে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা দেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর আদালত ইভ্যালির সব নথিপত্র ১২ অক্টোবরেরমধ্যে আদালতে দাখিল করতে রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসকে (আরজেএসসি) নির্দেশ দেন। এ অনুসারে, নথি দাখিলের পর গতকাল (মঙ্গলবার : ১২ অক্টোবর) আদালত চার সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেওয়ার অভিমত দেন। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী এ এম মাছুম ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন শুনানিতে ছিলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও প্রতিযোগিতা কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা। প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বর্তমানে ইভ্যালির নাম দেশজুড়ে আলোচিত। প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইতোমধ্যে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তাঁর স্ত্রী ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানির মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে রাসেল ও শামীমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে কারাগারে আছেন এই দম্পতি।