কমিটি দিতে পারবেন না জয়-লেখক

কমিটি দিতে পারবেন না জয়-লেখক

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনের আগে আর কোনও শাখা কমিটি দিতে পারবে না কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটি ও পদ বাণিজ্য আটকে দিতেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

সম্প্রতি ছাত্রলীগ মধ্যরাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একের পর এক কমিটি ঘোষণা করে আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। অর্থনৈতিক লেনদেনের অভিযোগের তীর ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের দিকে। ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতারাই এমন অভিযোগ করেছেন। গঠনতন্ত্রে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া প্রত্যেকটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে। এতে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। শুধু ছাত্রলীগ নয়, সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের কমিটি দেওয়ার ক্ষমতাও বিলুপ্ত করা হয়েছে।

এদিকে গত চার দশকের ব্যবধানে ছাত্রলীগের পদ বেড়েছে ছয়গুণ। ৩০১ সদস্যের কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত অন্য নেতাদের সেখানে নামমাত্র কার্যক্রম রয়েছে। এতে অবস্থা এমন হয়েছে— নিজ সংগঠনের নেতারাও একে অন্যকে নামে বা চেহারায় চিনতে পারছেন না। এক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে না। ফলে কমিটির কাঠামো বড় হলেও আসছে না যোগ্য নেতৃত্ব।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিযোগ, গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে ব্যক্তিস্বার্থে সংগঠন পরিচালনা করেছেন ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। জয়-লেখক কমিটির তিন বছরে দুই মাস পরপর ১৮টি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা হওয়ার কথা, সেখানে হয়েছে মাত্র একটি। সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামতও নেন নি তাঁরা। সম্প্রতি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেশ কয়েকটি কমিটি দিয়েছেন ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। 

কমিটি ঘোষণার পরই শুরু হয় বিতর্ক। রাজাকার ও বিএনপি পরিবারের সদস্য এবং শিক্ষককে প্রহারের দায়ে ছাত্রলীগ থেকে আজীবন বহিষ্কৃতদের কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছাত্রলীগের একাধিক নেতার। গত সেপ্টেম্বরে এসব নিয়ে লিখিত অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরে জমা দিতে তাঁর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছিলো সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির একটি অংশ। পরে তাঁরা অভিযোগপত্রটি ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতার কাছে হস্তান্তর করে।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এ প্রসঙ্গে বাঙলার কাগজ ও ডনকে জানান, নতুন করে ছাত্রলীগের আর কোনও কমিটি ঘোষণা করা হবে না। এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। 

সার্বিক ব্যাপারে জানতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেও তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয় নি।