এক শিকড়েই জন্ম এক শাপলা বিল

এক শিকড়েই জন্ম এক শাপলা বিল
ডন প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি : সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ফুটে আছে শত শত লাল শাপলা। একেবারে লাল-সবুজের সমাহার। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গেসঙ্গে শাপলার বিলে দেখা মিলে হরেক রকম পাখির। স্থানীয় লোকজন প্রতিদিন দেখতে এসে শাপলা তুলে নিয়ে যান। এই সুন্দর স্থানটি খাগড়াছড়ির দীঘিনালার দক্ষিণ হাচিনসনপুর এলাকায়। ২০১৬ সালে প্রসূতিদের চিকিৎসার প্রয়োজনে দক্ষিণ হাচিনসনপুর এলাকার প্রশিক্ষিত ধাত্রী নিধুর বালা চাকমা (৭০) লাল শাপলা ফুলের একটি শিকড় এনে বিলে লাগান। সেই একটি শাপলা থেকে শত শত শাপলা হয়েছে তিন একরের বিলে। সম্প্রতি দক্ষিণ হাচিনসনপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাচিনসনপুর উচ্চবিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্পণ চাকমা বিল থেকে শাপলা তুলছে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে দিয়ে বিল থেকে শাপলা সংগ্রহ করছেন। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিলটি একসময় মাইনী নদীর অংশ ছিল। নদীর গতিপথ ঘুরে যাওয়ায় এটি বিলে পরিণত হয়। তিন একর পরিমাণ বিলের মালিক স্থানীয় কয়েকজন পাহাড়ি। নিধুর বালা চাকমাও বিলের মালিকদের একজন। স্থানীয় মহর আলী ও মো. বান্নো বলেন, ‘এ বিল থেকে এক ব্যক্তি ৫০ হাজার টাকার শাপলা তুলে বিক্রি করেছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে শাপলা তুলে নিয়ে যান। কিন্তু নিধুর বালা চাকমা কোনো টাকা–পয়সা নেন না। উনি একজন প্রশিক্ষিত ধাত্রী। উনি পাহাড়ি–বাঙালি সবার উপকার করেন, প্রসূতি মায়েদের সেবা করেন। আমরা প্রতিদিন বিলে শাপলা দেখতে আসি। ভোরের আলো ফুটলে হরেক রকমের পাখির দেখা মেলে এ বিলে। তবে লোকজন বেশি হলে পাখির দেখা পাওয়া যায় না।’ শাপলা তুলতে আসা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্পণ চাকমা বলে, ‘আমাকে লোকজন টাকা দিলে আমি বিল থেকে শাপলা তুলে দিই। শাপলা ফুল তুলতে আমার ভালো লাগে। বিলের লাল শাপলা অনেক সুন্দর। আগে বইয়ে শাপলা দেখেছি, এখন চোখের সামনে শাপলা দেখছি।’ ২০১৬ সালে প্রসূতিদের চিকিৎসার প্রয়োজনে নিধুর বালা চাকমা শাপলা ফুলের একটি শিকড় বিলে লাগান। সেই একটি শাপলা থেকে শত শত শাপলা হয়েছে তিন একরের বিলে। বিলে শাপলা লাগানো নিধুর বালা চাকমা বলেন, ‘আমি একজন ধাত্রী। শাপলা ফুল প্রসূতিদের চিকিৎসার কাজে লাগে। সে জন্য ২০১৬ সালে আমি একটি শাপলা ফুলের শিকড় সংগ্রহ করে লাগিয়েছিলাম। একটি শিকড় থেকে আজ শত শত শাপলা লতা হয়েছে। সেখানে ফুটে শত শত শাপলা।’