ইসলামী ব্যাংকে সোনায় হাত

ইসলামী ব্যাংকে সোনায় হাত

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : চট্টগ্রামে এক গ্রাহক ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখার লকার থেকে ১৪০ ভরি স্বর্ণালংকার গায়েবের অভিযোগ তোলার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি করেছে।

শনিবার (পহেলা জুন) স্বর্ণ গায়েবের অভিযোগ জানাজানি হওয়ার পর রবিবার (২ জুন) চট্টেশ্বরী রোডে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রোকেয়া আক্তার নামে সেই গ্রাহক।

তিনি জানান, ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার লকারে তিনি সাত থেকে আটটি বক্সে প্রায় দেড়শ ভরি স্বর্ণালংকার রেখেছিলেন। গত ২৯ মে ব্যাংকে গিয়ে দেখতে পান, ৯/১০ ভরি ছাড়া অন্য স্বর্ণালংকার উধাও।

লকারের পেছন থেকে দুইটি বক্সে কিছু অলংকার পেলেও অন্য বাক্সে কোনও অলংকার ছিলো না বলে জানিয়েছেন তিনি।

সেদিন ব্যাংকে যাওয়ার পর যা হয়েছিলো, তার বর্ণনা দিয়ে রোকেয়া বলেন, নিয়ম অনুযায়ী লকার ইনচার্জ মূল ফটক খুলে দেন। ওই দিন তিনি মূল দরজা খুলে দিয়ে আমার কাছে লকার নম্বর কত জানতে চান। আমি নম্বর বলার পর জানান, আমার লকার খোলা।

এ ঘটনার পর চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে যান সেই গ্রাহক। কিন্তু পুলিশ বলে, ‘সাধারণ ডায়েরি নয়, মামলা করতে হবে।’

জানতে চাইলে চকবাজার থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, গত বুধবার ভুক্তভোগী নারী থানায় এসে অভিযোগ করার পর আমি নিজেই টিম নিয়ে ব্যাংকে গিয়েছিলাম। ব্যাংকের লোকজন বলেছে লকার খোলা ছিল। আমি অভিযোগকারীকে বলেছি একটা এজাহার দিতে। তারা গত পাঁচ দিনে কোনও এজাহার দেন নি।

ব্যাংক কী বলছে :
রোকেয়া আক্তারের অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) ও চকবাজার শাখার ব্যবস্থাপক এসএম শফিকুল মাওলা চৌধুরী বলেন, অভিযোগকারী নারী ২০০২ সাল থেকে আমাদের গ্রাহক। স্বর্ণ মিসিংয়ের বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে আমাদের জানিয়েছেন, তবে লিখিতভাবে কিছু বলেন নি।

তিনি বলেন, আমরা মৌখিক অভিযোগটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং অভিযোগের সত্যতা জানতে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গ্রাহককে বলেছি বিষয়টি তাঁরা যেন খোঁজ নেন, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে খোঁজ নিচ্ছি। সোমবার পর্যন্ত তাঁরা আমাদের সময় দিয়েছেন।

ব্যাংকে লকারের নিরাপত্তার বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, লকারের মূল ফটকের চাবি থাকে শুধু তাঁদের নির্ধারিত কর্মকর্তার কাছে। লকারের মূল চাবি গ্রাহক ছাড়া অন্য কারও কাছে থাকার কোনও সুযোগ নেই। এমনকি গ্রাহকের কোনও মনোনীত প্রতিনিধিও লকার খুলতে পারেন না।

ওই গ্রাহকের কী পরিমাণ স্বর্ণালংকার রাখা ছিলো, সে বিষয়েও জানার সুযোগ থাকে না বলেও জানান শফিকুল মাওলা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী একজন গ্রাহক ভল্ট ব্যবহার করলে সেখানে কোনো দাহ্য কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র রাখবেন না বলে ঘোষণা দেন। বাকি পণ্যের বিষয়ে গ্রাহকের ঘোষণা নেওয়ার কোনও সুযোগ ব্যাংকের নেই।