২৮ লাখ টাকা ফেরত পেলেন আলেশা মার্টের ৯ গ্রাহক।

২৮ লাখ টাকা ফেরত পেলেন আলেশা মার্টের ৯ গ্রাহক।
ডন প্রতিবেদন : পাওনা টাকা ফেরত দেওয়া শুরু করেছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ৯ গ্রাহককে ২৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ। আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরিশোধ সেবাদানকারী (পেমেন্ট গেটওয়ে) প্রতিষ্ঠান এসএসএল কমার্জে আটকে থাকা আলেশা মার্টের ৪২ কোটি টাকা পর্যায়ক্রমে ফেরত দেওয়া হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। আলেশা মার্ট ও এসএসএল কমার্জ যৌথভাবে যে তালিকা করেছে, সে অনুযায়ী ৪৮৫ গ্রাহকের ১ হাজার ১৪৩টি লেনদেনের বিপরীতে ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা আটকে ছিলো। কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্সের প্রধান এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, আটকে থাকা ৪২ কোটি টাকার মধ্যে গত বছরের জুন পর্যন্ত ৩২ কোটি টাকা এবং জুলাই–পরবর্তী সময়ে ১০ কোটি টাকা রয়েছে। প্রথম পর্বে এই ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হলো। বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘একসময় মনে হয়েছিল গ্রাহকের কোনো টাকা ফেরত দিতে পারব না। কিন্তু চেষ্টা করে গেছি, যার সুফল পাচ্ছেন এখন গ্রাহকেরা।’ আলেশা মার্টের আগে কিউকম গ্রাহকেরা এখন পর্যন্ত ২৩ কোটি টাকা ফেরত পেয়েছেন বলেও জানান তিনি। এসএসএল কমার্জ ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখেছে, গ্রাহকেরা ৪২ কোটি টাকা পরিশোধ করলেও এগুলো আলেশা মার্টের ব্যাংক হিসাবে ঢোকেনি। যদিও বিভিন্ন ব্যাংকে আলেশা মার্টের ৫৬টি হিসাব রয়েছে। জানা গেছে, গত অক্টোবর শেষে আলেশা মার্টের এ হিসাবগুলোতে গ্রাহকেরা প্রায় ২ হাজার ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা জমা করেছেন। এর মধ্যে আলেশা মার্ট ১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আলেশা মার্টের কাছে গ্রাহকদের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আটকে ছিল। এর মধ্যে ১২ কোটি টাকা পরিশোধও করেছে আলেশা মার্ট। ৪২ কোটি টাকা দেওয়ার পর যে টাকা বাকি থাকবে, তা–ও ফেরত দেবে আলেশা মার্ট। গত ২ ডিসেম্বর সরকারের কাছ থেকে ৩০০ কোটি টাকার চলতি মূলধন সহায়তা চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে আলেশা মার্ট। তিন হাজার শতাংশ জমি বন্ধকসহ প্রয়োজনীয় জামানত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আবেদনপত্রে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির কর্মীর সংখ্যা ৫০ হাজার এবং অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মাসে আট লাখ ক্রয়াদেশ পেয়ে থাকে। গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়া ও নিজেদের কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে এ অর্থসহায়তা চেয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। দুই সপ্তাহ পর ১৫ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আলেশা মার্টকে জানিয়ে দেয়, সরকার কোনো অর্থসহায়তা দেবে না, আলেশা বরং ব্যাংকে আবেদন করতে পারে। অনুষ্ঠানে আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদার বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া বা সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও তিনি গ্রাহকদের অর্থ পরিশোধ করবেন। কিউকম এবং আলেশা মার্টের পাশাপাশি ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, বুমবুম, আদিয়ান মার্ট এবং নিড ডট কমের কাছেও অনেক গ্রাহকের টাকা আটকে আছে। বাকি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আলেশা মার্টের গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া শুরুর পর অনেক গ্রাহকের আস্থা তৈরি হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কার কী অবস্থা, তা দেখে টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করবো।’