এক এসএমএসে ধরা পড়লো জাল সনদ বাণিজ্যের ৭ সদস্য

এক এসএমএসে ধরা পড়লো জাল সনদ বাণিজ্যের ৭ সদস্য
ডন প্রতিবেদন : সম্প্রতি নূর তাবাসসুম নামে এক এসএসসি পাস শিক্ষার্থির মায়ের ফোনে একটি এসএমএস আসে। সেখানে জানানো হয়, তাঁর মেয়ের এসএসসি সনদের নাম পরিবর্তন হয়ে নূর রিমতি হয়েছে। অভিভাবকরা ওই শিক্ষার্থির স্কুলে গিয়ে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করতে বলা হয়। শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে দেখেন এসএসসির পাশাপাশি তাঁর পিএসসি, জেএসসির সনদের নামও পরিবর্তন হয়ে গেছে। পরে ভুক্তভোগি ওই পরিবার ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করে। মামলাটি তদন্তের ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাজধানির মোহাম্মদপুর, রমনা ও চকবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এরসঙ্গে জড়িত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারিসহ একটি চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা পরস্পরের যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন যাবত জাল সনদ তৈরি ও সরবরাহ করে আসছিলো। গ্রেপ্তাররা হলো নূর রিমতি, জামাল হাসেন, এ কে এম মোস্তফা কামাল, মো. মারুফ, ফারুক আহম্মেদ স্বপন, মাহির আলমা ও আবেদ আলী। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ প্রবেশপত্র, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের নাম ও অনলাইন রেজাল্ট শিটের কপি জব্দ করা হয়। শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার নূর রিমতি ২০১৯ সালে এসএসসি পরিক্ষায় রাজধানির সিটি মডেল কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হয়। কিন্তু তাঁর ইতালি যাওয়ার জন্য এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। জাল সনদ তৈরির জন্য সে তার মামা গ্রেপ্তার জামাল হোসেনের মাধ্যমে এ কে এম মোস্তফা কামালের সঙ্গে ৩ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তি অনুযায়ি মোস্তফা কামাল শিক্ষা বোর্ডের দালাল চক্র মারুফ, মাহবুব আলম, ফারুক আহম্মেদ স্বপন ও আবেদ আজাদের সঙ্গে সমন্বয় করে নূর তাবাসসুমের সনদ সংক্রান্ত জেএসজি ও এসএসসি পাসের সকল তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তারা প্রথমে শিক্ষার্থির বাবার নাম, মায়ের নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফরমেটে আবেদন করেন। শিক্ষা বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারিদের টাকার বিনিময়ে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের রেজাল্ট আর্কাইভে নির্ধারিত ফরমেটে সংরক্ষিত কৃতকার্য প্রকৃত শিক্ষার্থি নূর তাবাসসুমের তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থি নূর রিমাতির তথ্যসমূহ আপলোডের মাধ্যমে জাল সনদ তৈরি করে। পরে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নেয়। এমনকি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটেও পরিবর্তিত শিক্ষার্থির সংযোজিত তথ্য দেখায়। এই প্রতারক চক্র ঢাকা শিক্ষা বোর্ডসহ অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পরিক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থিদের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখসহ অন্যান্য তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থিদের তথ্য সংযোজন করে জাল সনদ তৈরির মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলো। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধিন আছে বলেই জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।