সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী।

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী।

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ; সিলেট : বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিলেট ও সুনামগঞ্জে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ শুরু করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

আজ শুক্রবার (১৭ জুন) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বার্তায় সিলেটে সেনাবাহিনী মোতায়েনের তথ্য জানানো হয়। পরে বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বেলা আড়াইটার দিকে সুনামগঞ্জে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি বাঙলা কাগজ ও ডনকে নিশ্চিত করেন।
 
আইএসপিআরের বার্তায় বলা হয়, অসামরিক প্রশাসনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সিলেটে বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে সকালে সিলেটের গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যায় আটকেপড়াদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী যাচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান।

ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে সিলেট জেলার নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে নদীর তীর উপচে নতুন করে বিভিন্ন বাড়িঘরে পানি ঢুকছে। এমন অবস্থায় বন্যাকবলিত পরিববারগুলো দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগের আশঙ্কা করছে।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সিলেট নগরের ৮ থেকে ১০টি এলাকা ছাড়াও জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও সদর উপজেলার অন্তত ৫ শ গ্রাম এরইমধ্যে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ : সিলেটের পর সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গতদের সহায়তায়ও সেনাবাহিনী সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন আজ বেলা আড়াইটার দিকে বাঙলা কাগজ ও ডনকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর দলটি এরই মধ্যে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, ‍সুনামগঞ্জ সদরসহ বন্যাদুর্গত অঞ্চলগুলোতে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নেবেন সেনা সদস্যরা।

নদনদীর পানি বেড়ে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে সদরসহ জেলার প্রায় সব প্রান্তের ঘরবাড়িতে।

বন্যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার বাসিন্দারা। শহরসহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাত থেকে জেলা শহর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন।

দুর্ভোগে মাত্রা যোগ করেছে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কহীনতা। জেলা শহরে বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না।

বানভাসীদের মধ্যে যাঁরা বাড়িতে আছেন, তাঁরা শুকনো খাবার খেয়ে কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে যাঁদের বাড়িতে থাকার মতো অবস্থা নেই, তাঁরা মরিয়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর দিকে যেতে।

যা বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড : পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, সুনামগঞ্জের ৮০ শতাংশ অঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। শহরের প্রায় সব বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে।

তিনি জানান, শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল পৌনে ৯টার দিকে সুরমা পয়েন্টে বন্যার পানি বিপৎসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।

পাউবোর এ কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার পানির স্তর ছিলো ৮ দশমিক ২৪, যা শুক্রবার বেড়ে হয় ৮ দশমিক ৮৫।

তিনি জানান, ভারতের মেঘালয়ে আকস্মিক ভারী বর্ষণের কারণে সুনামগঞ্জ জেলা প্লাবিত হয়েছে।