ডন প্রতিবেদন : বাংলার স্বাধীনতার বহ্নিশিখা বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ৮৯তম আত্মাহুতি দিবস আজ (২৪ সেপ্টেম্বর)। ১৯৩২ সালের এইদিনে চট্টগ্রামের বর্ণবাদি ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণকালে আত্মাহুতি দেন সূর্যসেনের এই বীর সহযোদ্ধা।
চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাট গ্রামে ১৯১১ সালের ৫ মে জন্মগ্রহণ করেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। এই বিপ্লবী নারী অমর হয়ে আছেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বীরত্বের প্রতীক হয়ে। প্রীতিলতার শৈশবের নাম রাণী। তার শিক্ষাজীবন চট্টগ্রাম, ঢাকা ও কলকাতায়। সে সময়েই রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। একপর্যায়ে হয়ে উঠেন মাস্টারদা সূর্য সেনের বিপ্লবী আন্দোলনের সহযোদ্ধা।
ইচ্ছে ছিলো বিজ্ঞানী হবেন। কিন্তু দেশমাতৃকার আহ্বান তাঁকে যোদ্ধা তৈরি করে। প্রীতিলতা ১৯২৮ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। স্বাধীনতার পটভূমিতে রচনা করেন নাটক। যা মঞ্চায়ন করেন নারীদের নিয়েই।
এক পর্যায়ে সূর্যসেনের বিপ্লবী বাহিনীর সদস্য হন প্রীতিলতা। ১৯২৪ সালে বেঙ্গল অর্ডিন্যান্সের জরুরি আইনে বিপ্লবীদের বিনাবিচারে আটক শুরু হলে সংগঠনে তার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে বি এ পাশ করলেও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে ফল স্থগিত করা হয় তাঁর।
১৯৩২ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাব দখলে ১৫ জনের একটা বিপ্লবী দলের নেতৃত্ব দেন প্রীতিলতা। বর্ণবাদি এই ক্লাব আক্রমণকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। গুলিবিদ্ধ হন বীরকন্যা প্রীতিলতা। সহযোদ্ধা বিপ্লবীদের আত্মগোপনে যাবার নির্দেশ দেন। নিজে আত্মাহুতি দেন সায়ানাইড নিয়ে।
মহান এই জীবনী নিয়ে তৈরি হচ্ছে চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’ অবলম্বনে এটি পরিচালনা করছেন প্রদীপ ঘোষ।
বীর নারী প্রীতিলতা আজও মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন কিংবদন্তী হয়ে। যুগে যুগে তিনি বেঁচে থাকবেন ন্যায় ও স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে। বেঁচে থাকবেন সংগ্রামের কিংবদন্তী হিসেবে।
কর্মসূচি : চট্টগ্রামে বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা আয়োজনে বীরকন্যার আত্মাহুতি দিবসটি পালন করবে।