শিশু মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের সেই মালিক গ্রেপ্তার।

শিশু মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের সেই মালিক গ্রেপ্তার।
ডন প্রতিবেদন : রাজধানীর শ্যামলীর আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল থেকে ‘টাকার অভাবে’ যমজ শিশুকে চিকিৎসা না দিয়ে বের করে দেওয়ার ঘটনায় হাসপাতালের মালিককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) মোহাম্মদপুর থেকে আমার বাংলাদেশ হাসপাতালের মালিক গোলাম সারোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিল পরিশোধ না করতে পারায় হাসপাতাল থেকে বের করে দিলে যমজ শিশুর একজনের মৃত্যু হয়। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়েছেন। জানা গেছে, ‘টাকা দিতে না পারায়’ রাজধানীর শ্যামলীর আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল থেকে ৬ মাস বয়সী দুই যমজ শিশুকে বের করে দেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে যমজ শিশুদের একজন মারা যান। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই শিশু আহমেদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আরেক শিশু আব্দুল্লাহকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুদের মা আয়েশা বেগম বাঙলা কাগজ এবং ডনকে বলেন, গত শনিবার (১ জানুয়ারি) বাচ্চা দুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের দুজনকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) না থাকায় পরদিন রবিবার (২ জানুয়ারি) এক দালাল কম টাকায় ভালো চিকিৎসার কথা বলে শ্যামলীর আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ‘ওই হাসপাতালে ৭২ ঘণ্টায় ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা বিল আসে। আমি গরিব মানুষ, এতো টাকা দিতে পারবো না জানালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে মারধর করে। তাদের পায়ে ধরলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। আমার কাছে থাকা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে অসুস্থ বাচ্চাসহ আমাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। পরে ফার্মেসিতে থাকা ওষুধের টাকা নেওয়ার জন্য শাহিন নামের একজনকে আমারসঙ্গে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠায়। তখন হাসপাতালে আসার পথে আমার ছেলে আহমেদ মারা যায়।’ ‘আমারসঙ্গে কেউ নেই, আমি একা। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’ আয়েশা বেগম আরও বলেন, আমার স্বামী বিদেশ থেকে অনেক কষ্টে টাকা পাঠিয়েছেন। তারা ভুয়া বিল করে আমার কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। আমার একটা ছেলেকে হারিয়েছি। আরেক সন্তানের অবস্থাও ভালো নয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বাঙলা কাগজ এবং ডনকে বলেন, শ্যামলী থেকে আসা এক নারীর যমজ শিশুদের ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসার পথে আহমেদ নামে এক শিশু মারা যায়। আরেকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাচ্চু মিয়া বলেন, রোগীরসঙ্গে আসা আমার বাংলাদেশ হাসপাতালের শাহিন নামে একজনকে আটক করা হয়েছিলো। ওই হাসপাতালের মালিকের নাম গোলাম সারোয়ার এবং ফার্মেসির মালিকের নাম জাহাঙ্গীর আলম। হাসপাতালটি শ্যামলীর রূপায়ন শেলফোর্ড টাওয়ারের ১০ তলায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।