শারক্কীয়ার সামরিক শাখার প্রধান মাসুদ ও বোমা বিশেষজ্ঞ আলম র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার

শারক্কীয়ার সামরিক শাখার প্রধান মাসুদ ও বোমা বিশেষজ্ঞ আলম র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ; কক্সবাজার : পার্বত্য এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জোরালো অভিযানে টিকতে না পেরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যরা। তাদের মধ্যে সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীর ওরফে মাসুদ রনবীর ও তার সহযোগী বোমা বিশেষজ্ঞ আবুল বাশার মৃধা ওরফে আলম ওরফে কয় আশ্রয় নেয় কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। তাদের অবস্থান শনাক্তের পর অভিযানে নামে র‌্যাব।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) ভোর থেকে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-২, র‌্যাব-৩ এবং র‌্যাব-১৫ যৌথ চিরুনি অভিযান শুরু করে। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গি সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মাসুদ এবং বোমা বিশেষজ্ঞ আলম পালানোর চেষ্টা করে। পরে র‌্যাব সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করে।

এদিন সকালে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার শূরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান মাসুদ ও তার সহযোগী বোমা বিশেষজ্ঞ আলমকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত ২০ অক্টোবর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-৭-এর বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সমতল থেকে পাহাড়ে আত্মগোপনে থাকা সাত জঙ্গি এবং তাদের সহায়তাকারী তিন কেএনএফ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরের দিন আসামিদের বিরুদ্ধে বিলাইছড়ি থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সাত জঙ্গির মধ্যে নতুন জঙ্গি সংগঠনের সামরিক শাখার উপ-প্রধান সৈয়দ মারুফ আহমেদ ছিলেন। মারুফকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মাসুদের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। র‌্যাব গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় জঙ্গি সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মাসুদ এবং আইইডি বা বোমা বিশেষজ্ঞ আলম কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। এর পরপরই তাদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব।

র‌্যাবের মুখপাত্র আরও বলেন, আমরা আগেই পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত ৫৫ জনের তালিকা দিয়েছিলাম। সেখানে আজকে গ্রেপ্তারকৃত আবুল বাশার ওরফে আলমের নাম ছিলো। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ আলম জানিয়েছে, গত ৩ অক্টোবর যৌথ অভিযান শুরু হওয়ার পর তিনি ৫৫ জনের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাহাড় থেকে পালিয়ে সিলেট চলে যান এবং সামরিক শাখার প্রধান মাসুদের কাছে আশ্রয় নেন। তারা দুইজন বেশ কিছুদিন আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আত্মগোপন করেন।

এদিকে অভিযানে গ্রেপ্তার দুই জঙ্গির হেফাজত থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন, ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, একটি কার্তুজ, দুইটি একনলা বন্দুক, ১১টি ১২ বোরের কার্তুজ, একশ রাউন্ড গুলি, একটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।