শিক্ষকদের উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঙলা কাগজ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর বাড়িতে হামলা ও নড়াইলে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

শনিবার (২ জুলাই) বিকেল ৪ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে তাঁরা এ দাবি জানায়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন সিকদার। বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা রহুল আমিন মজুমদার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদসহ অন্য নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর উত্তরার বাসায় সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী অপশক্তিরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। নড়াইলে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে প্রশাসনের সামনে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। মৌলবাদী অপশক্তির আস্ফালন দেখার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করি নি। আমরা অস্ত্র জমা দিয়েছি, ট্রেনিং জমা দেই নি। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তির দোসর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদেরকে প্রয়োজনে আবার বীর মুক্তিযোদ্ধারা শক্ত হাতে প্রতিহত করবে। এর আগে কুমিল্লায় মন্দিরে পবিত্র কোরআন শরীফ রেখে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিলো বিএনপি-জামায়াত। ধর্মকে পুঁজি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই এদের মূল উদ্দেশ্যে। 

‘অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী ও নড়াইলের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রত্যেকটা সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন সিকদার বলেন, ধর্ম ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র আবার শুরু হয়েছে। এদেরকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। কারণ এরা সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রকৃত শত্রু। এরা বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। এখন দেশের মানুষ অনেক সচেতন। ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রকৃত চরিত্র ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। সামনে আরও হবে।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ থেকে ৫টি দাবি জানানো হয় :
১) অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকীর বাসায় হামলা ও নড়াইলে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। 

২) লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ৭২ এর সংবিধান পুনর্বহাল করে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

৩) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশে অবিলম্বে আইন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং দেশের সকল মসজিদ-মাদরাসায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে।

৪) বিভিন্ন ধর্মীয় সভা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানিমূলক গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। 

৫) সকল ধরনের মাদরাসায় নিয়মিত জাতীয় সঙ্গীত বাজানো, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ, শহিদ মিনার নির্মাণ এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানানো বাধ্যতামূলক করতে হবে।