রেলস্টেশন ও পশুরহাট সব জায়গায় ঢিলেঢালাভাব : করোনায় ১ দিনে ১২ জনের মৃত্যু।

রেলস্টেশন ও পশুরহাট সব জায়গায় ঢিলেঢালাভাব : করোনায় ১ দিনে ১২ জনের মৃত্যু।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরা ও যথাসম্ভব জনসমাগম বর্জন, কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালনসহ ৬টি নির্দেশনা ইতোমধ্যেই দিয়েছে সরকার। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সব মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে মঙ্গলবার (২৮ জুন) চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু নির্দেশনাগুলো মানার বা মানানোর কোনও কিছুই চোখে পড়ছে না। যেখানে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রেলস্টেশন থেকে শুরু করে পশুরহাটগুলোতে মানুষের গাদাগাদি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেখানে অধিকাংশ মানুষকেই মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, সোমবার (৪ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২ জন। যা গত ৪ মাসের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর আগে সবশেষ গত ৫ মার্চ করোনায় একদিনে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ওই সময়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৮৫ জন। এর চেয়ে বেশি শনাক্ত হয় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন ২ হাজার ৫৮৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৮৪২টি নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২৮৫ জনের দেহে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৭৭ জনই ঢাকা জেলার।

সবমিলে ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৯ হাজার ১৭৪ জন। মৃতদের ৯ জন ঢাকা বিভাগের, একজন চট্টগ্রামের, একজন ময়মনসিংহের ও একজন খুলনার। মৃতদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী।

গত একদিনে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্ত হলো ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৯৭৪ জনের।

করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত ১৬ জুন প্রথমবারের মতো পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়ায়। টানা ১৭ দিন ৫ শতাংশের বেশি শনাক্তের হার পাওয়া যাওয়ার পর দেশে চতুর্থ ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪৮২ জন। সার্বিকভাবে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৮ হাজার ৭৭৯ জন।

যে ৬ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো : 

১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে সব গণমাধ্যমে অনুরোধ জানাতে হবে।

২. সবক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম যথাসম্ভব বর্জন করতে হবে।

৩. ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানগুলোতে (যেমন : মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

৪. জ্বর, সর্দি, কাশি বা কোডিড-১৯ এর উপসর্গ দেখা দিলে কোভিড টেস্ট করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

৫. দোকান, শপিংমল, বাজার, ক্রেতা-বিক্রেতা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাঁকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

৬. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন।