রেমিট্যান্স পুরস্কার ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ : বৈধপথে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ৫৩ ব্যক্তি এবং রেমিট্যান্স আহরণ করা ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (১২ মে) অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কৃতদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। ২০১৯ ও ২০২০ সালে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণ ও আহরণের ভিত্তিতে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। মোট পাঁচ ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে সাধারণ পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারী এক্সচেঞ্জ হাউজ। সপ্তমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংক এ আয়োজন করে। রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে এদিন রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, অনেকে বলেন অর্থ পাচার হচ্ছে। দেশে অর্থ আসছে না। তবে আমি বলবো, বিভিন্ন সময় নানাভাবে যদি টাকা বিদেশে কেউ নিয়ে থাকে, সেগুলো দেশে ফেরত আসবে। এমন সুবিধা দেবো, যাতে সবাই টাকা নিয়ে ফিরে আসে। আমেরিকা ও ইউরোপের অনেক দেশে এখন টাকা রাখলে কমিশন দিতে হয়। এখন আর সুদ পায় না। তাই যে কোনও উপায়েই হোক বাংলাদেশে টাকা চলে আসবে। কারণ বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে টাকা রাখলে বেনিফিট পাওয়া যায়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, আকুর পেমেন্ট পরিশোধের পরও ১১ মে পর্যন্ত আমাদের রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার ছিলো। সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেওয়ার কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে- এমনটিই আশা করছেন তিনি। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যুগপৎভাবে ২০১৯ ও ২০২০ সালে ব্যক্তি পর্যায়ে সাধারণ পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে ৫৩টি এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণকারী এক্সচেঞ্জ হাউজ ও ব্যাংক ক্যাটাগরিতে ১৪টিসহ মোট ৬৭টি সম্মাননা পুরস্কারের মাধ্যমে অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০১৪ সাল থেকে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানো ব্যক্তি ও সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণকারী প্রতিষ্ঠানকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হচ্ছে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী হিসেবে মোট ১৯৯ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পেলো রেমিট্যান্স পুরস্কার : ২০১৯ সালে পেশাজীবী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন- মো. শামসু উদ্দিন, মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন ভুঁইয়া, আব্দুল করিম, মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম, ইব্রাহিম জোবায়েদ, নাছির উদ্দিন খান ও লুৎফর রহমান মুনশি। একই ক্যাটাগরিতে ২০২০ সালে সায়েদ উসমান, মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, হারুনুর রশিদ খান, মহিন হোসাইন, আবুল ফজলে মোহাম্মদ লতিফুল মাসুদ, আলতাফ হোসাইন, তাজনিন হক হোসাইন, খন্দকার তানভীর শামসুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, শামীম উদ্দিন, মোহাম্মদ তৌফিকুল আহসান ও মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। ২০১৯ সালে বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়েছেন- সুকেষ রায়, জুরান চন্দ্র ভৌমিক, মাহবুবুল হাদি ফজলে রব, এনায়েত উল্লাহ খান, রত্না রায়, আবরাহাম মোহাম্মদ সরকার, কানিজা ফাতেমা, আফিয়া আদমজী, এরশাদুল করিম ও খন্দকার মাহেন হাবিব। একই ক্যাটাগরিতে ২০২০ সালের পুরষ্কার পেয়েছেন- জুরান চন্দ্র ভৌমিক, মো. ওমর ফারুক, সুকেষ রায়, শামীম আহমেদ ভুঁইয়া, মোহাম্মদ নাছির হায়দার, আবরাহাম মোহাম্মদ সরকার, খন্দকার মোস্তফা মহলিয়া এশা, রশিদ উদ্দিন আহমেদ, লুৎফর নাহার ও খালেদ খান। ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে ২০১৯ সালের পুরস্কার পেয়েছেন- ওমর ফারুক, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ ওলিউর রহমান, আবু তাহের মোহাম্মদ আমানউল্লাহ, মো. বিল্লাহ হোসাইন ভুঁইয়া, ওবায়দুর রহমান, রুমানা আক্তার ও মোহাম্মদ আব্দুন নুর কাওসার। একই ক্যাটাগরিতে ২০২০ সালে পুরস্কার পেয়েছেন- আবু জাহেদ ইমরান, নাহিদা আক্তার, আনাম উল ইসলাম, মোহাম্মদ আরিফ উদ্দিন ও আব্দুল করিম। ২০১৯-২০ সালে রেমিট্যান্স আহরণকারী শীর্ষ চার ব্যাংক- ইসলামী, অগ্রণী, ডাচ্-বাংলা ও সোনালী ব্যাংক পুরস্কার পেয়েছে। ২০১৯ সালে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এনইসি মানি ট্রান্সফার লিমিটেড, প্লাসিড এনকে করপোরেশন ও সানমেন গ্লোবাল এক্সপ্রেস করপোরেশন পুরস্কার পেয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালেও রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলো।