রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ বলে ৩ রানে জিতলো ভারত।

রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ বলে ৩ রানে জিতলো ভারত।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : ওয়ানডে ক্রিকেটের মৃত্যু ঘটছে- কথাটা ক’দিন আগেই বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার উসমান খাজা। রবি শাস্ত্রী, ওয়াসিম আকরাম এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনও মনে করেন, ওয়ানডে ক্রিকেটের সেই আগের দিন আর নেই।

৩ সংস্করণের মধ্যে কোনও সংস্করণ উঠে গেলে সেটি ওয়ানডে ক্রিকেট, এমনও মনে করেন কেউ কেউ। কিন্তু পোর্ট অব স্পেনে কাল শুক্রবার (২২ জুলাই) রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত ওয়ানডে ম্যাচ দেখে এই সংস্করণের পক্ষে থাকা ক্রিকেটপ্রেমীদের সংখ্যাটা বাড়তে পারে। মোট ৬১৩ রানের এই ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে শেষ বলে।

টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ৩০৮ রান তোলে ভারত। জিততে হলে কুইন্স পার্ক ওভালে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি নতুন করে লেখাতে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এ মাঠে ১৯৮৮ সালে সর্বোচ্চ ২৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

কাল রাতে রেকর্ডটি নতুন করে লেখানোর খুব কাছে গিয়েও পারে নি নিকোলাস পুরানের দল। ৬ উইকেটে ৩০৫ রানে থেমেছে ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস। ৩ রানের জয়ে ৩ ম্যাচের এই সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো শিখর ধাওয়ানের দল।

রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, ঋষভ পন্ত, যশপ্রীত বুমরাদের মতো তারকারা এই সিরিজে নেই। অধিনায়কত্ব করতে হচ্ছে ধাওয়ানকে। ব্যাট হাতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রথম ম্যাচে। ৯৯ বলে তাঁর ৯৭ রানের ইনিংসে ভর করে এগিয়েছে ভারত। দুর্ভাগ্য, গুড়াকেশ মোতির বলে ‘নড়বড়ে নব্বই’-এ আউট হয়ে যান। ওয়ানডেতে এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো ‘নড়বড়ে নব্বই’-এ আউট হলেন ধাওয়ান। 

২০২০ সালের ডিসেম্বরের পর ভারতের হয়ে ওয়ানডে খেলতে নামা শুবমান গিলের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩ বলে ৬৪ রান। দুর্দান্ত কিছু শট খেলেছেন। শ্রেয়াস আইয়ার করেন ৫৪ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২টি করে উইকেট আলজারি জোসেফ ও মোতির।

তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৫ রানের সমীকরণে এসে ঠেকেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মোহাম্মদ সিরাজ ঠান্ডা মাথায় বল করে ক্যারিবিয়ানদের আরও কঠিন সমীকরণের মুখে ফেলেন শেষ বলে- জয়ের জন্য দরকার ৫ রান। ৪ মারলে ম্যাচ সুপার ওভারে, ছক্কা মারলে জয়। কিন্তু রোমারিও শেফার্ড শেষ বলে নিতে পেরেছেন মাত্র ১ রান। ২৫ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন শেফার্ড। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তাড়া করার ভিতটা তৈরি করেন কাইল মেয়ার্স, শামারাহ ব্রুকস ও ব্রান্ডন কিং। 

৭৫ রান করা মেয়ার্স দ্বিতীয় উইকেটে ব্রুকসের সঙ্গে ১১৭ রানের জুটি গড়েন। ব্রুকসের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৬ রান। ৫৪ রান করেন কিং। সপ্তম উইকেটে আকিল হোসেন ও শেফার্ডের ৩৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৩ রানের জুটিটি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলো। শেষ ১০ ওভারে ৯০ রানের হিসেব মেলাতে পারে নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরাজ ও শার্দুল ঠাকুর ২টি করে উইকেট নেন।

শতক না পেলেও নিজের ইনিংসটি উপভোগ করেছেন ধাওয়ান। ভারতের এই অধিনায়ক ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘ (শতক) না পাওয়াটা হতাশার। কিন্তু ৯৭ রানে আমি খুশি। উপভোগ করেছি। শুবমান, শ্রেয়াস ও আমি ব্যাট করার সময় বড় স্কোর গড়তে চেয়েছিলো, যেনো তরুণদের সুবিধা হয়। (তাড়া করতে নেমে) ওরা এতোটা কাছাকাছি আসবে আমরা ভাবি নি। এটা ভালো যে, শেষ পর্যন্ত আমরা স্নায়ুর চাপে ভেঙে পড়ি নি। তবে আমাদের আরও ভালো করতে হবে।’