বাসস : আজ বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সামনে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বিএনপির চিঠি উপস্থাপন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহ্মুদ। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতারা যে প্রচণ্ড মিথ্যাচার করেন, দেশের বিরুদ্ধে তাঁরা যে ষড়যন্ত্র করছেন, এগুলো হচ্ছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ।
দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে বিএনপি প্রচণ্ড মিথ্যাচার করছে উল্লেখ করে হাছান মাহ্মুদ বলেন, বিদেশিদের কাছে বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক চিঠি লেখার কারণে দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে আত্মরক্ষার জন্য তারা প্রচণ্ড মিথ্যাচার করছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো বিএনপি মহাসচিব স্বাক্ষরিত চিঠিপত্র ও বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মেরসঙ্গে বিএনপির ঢাকা অফিসের ঠিকানা-সংবলিত চুক্তিনামার কপি সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে সাহায্য প্রদান বন্ধ করা, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করা, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, দেশকে বিদেশিদের কাছে বিব্রত করার জন্য বিদেশিদের কাছে বিএনপি যে চিঠি লিখেছে এবং লবিস্ট নিয়োগ করেছে, এ জন্য দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে গতকাল (মঙ্গলবার) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সংবাদ সম্মেলন করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি যে বিদেশিদের কাছে চিঠি লিখেছেন, সেটি শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেছেন। কিন্তু সাহায্য বন্ধ করার জন্য যে কথা বলেছেন, সেটি অস্বীকার করেছেন।
হাছান মাহ্মুদ এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্যবিষয়ক হাউস কমিটির চেয়ারম্যান ও বৈদেশিক প্রোগ্রাম বরাদ্দবিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে ১৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে লেখা এবং বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান ও নিকট পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া এবং কাউন্টারটেররিজমবিষয়ক সিনেট সাবকমিটির চেয়ারম্যানের কাছে ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে লেখা বিএনপির প্যাডে মির্জা ফখরুল স্বাক্ষরিত চিঠির কপিগুলো তুলে ধরেন। মন্ত্রী চিঠিগুলোর শেষ অনুচ্ছেদ পড়ে শোনান এবং বলেন, সেখানে বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য দেওয়াকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা; অর্থাৎ প্রকারান্তরে সাহায্য বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
তথ্যমন্ত্রী লবিস্টদের সঙ্গে বিএনপির চুক্তিপত্রগুলো দেখিয়ে উল্লেখ করেন, বিএনপি কয়েকটি চুক্তিতে তাদের কার্যালয়ের ঠিকানা ২৮ ভিআইপি রোড, নয়াপল্টন, ঢাকা, বাংলাদেশ দিয়েছে। তাদের পক্ষে আবদুস সাত্তার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং একই ধরনের চুক্তি তারা বিদেশের ঠিকানা দিয়ে করেছেন, সেখানে স্বাক্ষর করেছেন জিয়াউল ইসলাম।
‘মির্জা ফখরুল সাহেব এই ডকুমেন্টগুলো কীভাবে অস্বীকার করবেন,’ প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপির নেতারা যে প্রচণ্ড মিথ্যাচার করেন, দেশের বিরুদ্ধে তাঁরা যে ষড়যন্ত্র করছেন, এগুলো হচ্ছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা যে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েও ক্রমাগতভাবে মিথ্যাচার করেছেন, গতকাল খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই তা প্রমাণিত হয়েছে; অর্থাৎ তাঁদের পুরো রাজনীতিটাই মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। জলজ্যান্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সংবাদ সম্মেলন করে মির্জা ফখরুল সাহেব মিথ্যাচার করেছেন, সেই প্রশ্ন আমারও।’
অব্যাহতভাবে দেশের বিরুদ্ধে বিএনপির মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র এবং লবিস্ট নিয়োগ করে দেশকে বিব্রত করার অপচেষ্টা সত্ত্বেও সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতিসংঘের পিস বিল্ডিং কমিশন; অর্থাৎ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই কমিশনের সদস্য, জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য ও পররাষ্ট্রবিষয়ক হাউস কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারেরসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে। তাই বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য।’