মির্জা ফখরুল কারাগারে

মির্জা ফখরুল কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৯ অক্টোবর) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক হুমায়ন কবীর খান। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, বাস ভাঙচুরের অভিযোগে রমনা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

ফখরুল-আব্বাস ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন– বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অবসর) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।

এর আগে গুলশানের বাসা থেকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আটক করা হয় বিএনপি মহাসচিবকে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য নেয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে।

ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা জানান, সকালে ডিবির লোকজন বাসায় এসে মির্জা ফখরুলসহ সবার সঙ্গে কথা বলেন। এরপর বাসা ও ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের হার্ড ডিস্ক নিয়ে চলে যান। ঠিক ১০ মিনিট পর ফিরে এসে তারা ফখরুলকে আটক করে নিয়ে যান।

তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল প্রচণ্ড অসুস্থ; তার চিকিৎসা চলছিলো। এভাবে নিয়ে যাবে, মেনে নিতে পারছি না। ৭৫ বছর বয়স্ক মানুষ। আশা করব যদি জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়, তা করে যেনো তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে শনিবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছিলো বিএনপি। একই সময়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করছিলো আওয়ামী লীগ। আর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই মতিঝিলের দিকে মাঠে ছিলো জামায়াতে ইসলামী।

বিএনপির সমাবেশ চলাকালে এক পর্যায়ে কাকরাইল, দৈনিক বাংলা মোড় ও পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি। আগুন, ভাঙচুর ও ককটেল ছোড়া হয়। পিটিয়ে হত্যা করা হয় পুলিশের এক কনস্টেবলকে। 

এ ছাড়া সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন আরও একজন।

সমাবেশ কর্মসূচি চলার মধ্যেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার সারাদেশে হরতালের ডাক দেয়। হরতালের দিন রোববার সকাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা হয়।