ভারতীয় নৌবাহিনীর ৮ কর্মকর্তাকে ছেড়েছে কাতার

ভারতীয় নৌবাহিনীর ৮ কর্মকর্তাকে ছেড়েছে কাতার

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ভারতের নৌবাহিনীর ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত’ সাবেক ৮ কর্মকর্তাকে ছেড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। তাঁদের মধ্যে ৭ জন এরই মধ্যে দেশে ফিরেছেন। তাঁরা দেড় বছর কাতারের কারাগারে বন্দি ছিলেন। নাগরিকদের রক্ষায় ভারত সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় তাঁরা ছাড়া পেলেন। খবর : এনডিটিভি’র।

ভারত সরকার তাঁদের নাগরিকের মুক্তি দেওয়ার এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা কাতারের আমিরের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করি। তার এই সিদ্ধান্তে ওই আট নাগরিকের মুক্তি ও স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে সাতজন এরই মধ্যে দেশে ফিরেছে।’

একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, কারামুক্তির আগ পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য ছিলো না। মুক্তি দেওয়ার পরপরই দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাঁদের নিয়ে যান। তাঁরা রোববার ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে উঠেন এবং সোমবার রাত ২টায় ভারতে পৌঁছেন। 

২০২২ সালের আগস্ট মাসে ভারতের সাবেক এই নৌ সেনাদের গ্রেপ্তার করে কাতার। ডাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসালট্যান্সি সার্ভিসেসের স্পর্শকাতর বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। ওই বিভাগে সাবমেরিন সম্পর্কিত কার্যক্রম চলতো। প্রতিষ্ঠানটি কাতারের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও স্বল্প পরিসরে কিছু সেবা দিতো। ওই কাজের ফাঁকেই ইসরায়েলের হয়ে ‘গুপ্তচরবৃত্তির’ সময় ধরা পড়েন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা ভারতের একটি যুদ্ধজাহাজ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। কাতারের ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেস (গোয়েন্দা বিভাগ) তাঁদের আটক করে। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির মামলা করা হয়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা কাতারের তথ্য ইসরায়েলে পাচার করছিলেন।

গত বছরের ২৬ অক্টোবর তাঁদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলো কাতারের একটি আদালত। এ ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড মওকুফ ও মুক্তির জন্য কাতারের আদালতে আবেদন করে ভারত। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে ভারত সরকার জানায়, কাতার সরকার তাঁদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা থেকে সরে এসেছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমানো হয়েছে। তবে তাঁরা নতুন কোনও শাস্তির মুখোমুখি হবেন তা নির্দিষ্ট করে নি। কাতারের আপিল আদালতে শুনানির সময় ভারতের রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দণ্ডিত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

ভারত বা কাতার কেউই ওই ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ প্রকাশ করে নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ভারতীয় ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষে ‘গুপ্তচরবৃত্তির’ অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে ভারতে ইসরায়েলের দূতাবাসের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন, এটি ইসরায়েলের বিষয় নয়।

ভারতীয় আট সাবেক নৌ সেনা হলেন : ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার বার্মা, ক্যাপ্টেন সৌরভ বাশিস্ট, কমান্ডার অমিত নাগপাল, কমান্ডার পুর্ণেন্দু তিওয়ারি, কমান্ডার সুগুনাকার পাকালা, নাবিক রাগেশ ও কমান্ডার সঞ্জীব গুপ্তা।