ব্যাংকে একই পরিবারের ৩ জনের বেশি পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩–এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রস্তাবিত আইনে একই পরিবারের তিনজনের বেশি পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারবেন না। বর্তমানে একই পরিবারের সর্বোচ্চ চারজন সদস্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে পারেন।
এ ছাড়া ঋণের ক্ষেত্রেও কিছুটা কড়াকড়ি বিধান যুক্ত করা হয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদেরও ঋণ নিতে হলে জামানত দিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান।
মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় ৩৪টি ধারা রয়েছে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্য বা আত্মীয় যে–ই হোক না কেন, তাঁদেরও জামানত দিয়ে ঋণ নিতে হবে।
প্রস্তাবিত আইনে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ও ঋণগ্রহীতার সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানান মাহমুদুল হোসাইন খান। তিনি বলেন, সামর্থ্য থাকার পরও ঋণ পরিশোধ না করলে, জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে ঋণ নিলে, যে উদ্দেশ্যে ঋণ নিয়েছিলেন, সেই উদ্দেশ্যে তা ব্যয় না করলে তাঁকে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির সংজ্ঞায় আনা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হওয়ার পর কেউ তা না দিলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকে সেই তালিকা দিতে হবে। তারপর বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও কোম্পানি নিবন্ধনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যবস্থা করতে পারবে। নোটিশ প্রাপ্তির দুই মাসের মধ্যে খেলাপি ঋণ গ্রহীতা তাঁর প্রাপ্ত টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে অর্থঋণ আদালতের মাধ্যমে টাকা আদায়ে প্রচলিত ব্যবস্থা চলমান থাকবে। কোনও ব্যাংক ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকা না পাঠালে বাংলাদেশ ব্যাংক কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা জরিমানা করতে পারবে।
ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে অনলাইনে :
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২৩–এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এই আইন অনুযায়ী, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের বর্ষটি অর্থবছর (জুলাই-জুন) অনুযায়ী হবে। এতোদিন তা বাংলা সন (বৈশাখ-চৈত্র) অনুযায়ী হতো।
এ ছাড়া সব ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে পরিশোধ করা হবে। কার কত ভূমি উন্নয়ন কর, তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় এবং ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে টানিয়ে দেওয়া হবে। তা নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে সেটিরও সুযোগ রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি যে ভাষণ দেবেন, তার খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।