বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে রাজস্থান

বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে রাজস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : ছিটকে পড়ার দুয়ার থেকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে প্লে-অফে জায়গা করে নেওয়া রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবার আর পেরে উঠলো না। তাঁদের পথচলা থামিয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জায়গা করে নিলো রাজস্থান রয়্যালস।

আহমেদাবাদে বুধবার (২২ মে) আইপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে বেঙ্গালুরুকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে রাজস্থান। প্রতিপক্ষের ১৭২ রান ৬ বল বাকি থাকতে টপকে গেছে তাঁরা।

লিগ পর্বে প্রথম ৮ ম্যাচের ৭টিই হেরে খাদের কিনারে চলে যায় বেঙ্গালুরু। পরে টানা ৬ ম্যাচ জিতে দারুণ প্রত্যাবর্তনে প্লে-অফে ওঠে তাঁরা। আর আসরের শুরুতে দারুণ ছন্দে থাকা রাজস্থান শেষ দিকে এসে খেই হারিয়ে ফেলে। এক পর্যায়ে টানা ৪ ম্যাচ হারা দলটিই এখন খেলবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী শুক্রবার।

চলতি আইপিএলে দেখা গেছে রানের জোয়ার। কিন্তু দুই দলের এই লড়াইয়ে একজন ব্যাটসম্যানও পারেন নি ফিফটি করতে। ম্যাচে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন রাজস্থানের ইয়াশাসবি জয়সওয়াল। দলটির অভিজ্ঞ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন স্রেফ ১৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বেঙ্গালুরু পঞ্চম ওভারে হারায় ফাফ দু প্লেসিকে। ছন্দে থাকা কোহলি খেলছিলেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই। কিন্তু ইউজভেন্দ্র চেহেলকে স্লগ সুইপ করে ফেরেন তিনি। ১ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৩ রানের ইনিংসের পথে আইপিএল ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আট হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন ভারতের ব্যাটিং গ্রেট।

এরপর ক্যামেরন গ্রিন ও রাজাত পাতিদারের জমে ওঠা ৪১ রানের জুটি ভাঙেন অশ্বিন। অভিজ্ঞ স্পিনার পরপর দুই বলে ফিরিয়ে দেন গ্রিন ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে।

চলতি আইপিএলটা ভুলে যাওয়ার মতো কেটেছে ম্যাক্সওয়েলের। অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ১০ ম্যাচে নয় ইনিংসে কেবল দুইবারই যেতে পেরেছেন দুই অঙ্কে। আসরে শূন্য রানে ফিরলেন এনিয়ে চারবার! এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ১৮ বার শূন্য রানে আউট হওয়ার তালিকায় দিনেশ কার্তিকের পাশে বসলেন তিনি।

পরপর দুই বলে দুই উইকেট পেতে পারতেন আভেশও। দুটি করে ছক্কা-চারে ২২ বলে ৩৪ রান করা পাতিদারকে ফেরানোর পর তিনি এলবিডব্লিউ করে দেন কার্তিককেও। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান বেঙ্গালুরুর কিপার-ব্যাটসম্যান। যদিও তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের অবকাশ আছে।

কার্তিক করতে পারেন নি কিছুই। মাহিপাল লোমরোরের ২৭ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ৩২ রানের ইনিংসে লড়ার মতো পুঁজি পায় বেঙ্গালুরু।

লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় ওভারে জয়সওয়ালকে হারাতে পারতো রাজস্থান। কিন্তু ইয়াশ দায়ালের বলে স্লিপে কঠিন ক্যাচটি নিতে পারেন নি গ্রিন। এই পেসারের পরের ওভারে বাউন্ডারিতে টম কোলার-ক্যাডমোরের সহজ ক্যাচ ছাড়েন ম্যাক্সওয়েল। পরের ওভারেই কোলার-ক্যাডমোরকেচমৎকার এক ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন লকি ফার্গুসন।

গ্রিনের বলে স্কুপ করে কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩ রানে বেঁচে যাওয়া জয়সওয়াল। রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় বেঙ্গালুরু। পরের ওভারেই কার্ন শার্মাকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হন রাজস্থান অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। রান আউটে কাটা পড়েন ধ্রুভ জুরেল।

রিয়ান পারাগ ও শিমরন হেটমায়ার দলকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নেন। তাদের ৪৫ রানের জুটিতেই জয়ের কাছে পৌঁছে যায় রাজস্থান। ১৮তম ওভারে এই দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ সিরাজ। তাতে লাভ হয় নি। রভম্যান পাওয়েলের ব্যাটে এক ওভার বাকি থাকতেই কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে যায় দলটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু : ২০ ওভারে ১৭২/৮ (কোহলি ৩৩, দু প্লেসি ১৭, গ্রিন ২৭, পাতিদার ৩৪, ম্যাক্সওয়েল ০, লোমরোর ৩২, কার্তিক ১১, স্বপ্নিল ৯*, কার্ন ৫; বোল্ট ৪-০-১৬-১, সান্দিপ ৪-০-৪৮-১, আভেশ ৪-০-৪৪-৩, অশ্বিন ৪-০-১৯-২, চেহেল ৪-০-৪৩-১)

রাজস্থান রয়্যালস : ১৯ ওভারে ১৭৪/৬ (জয়সওয়াল ৪৫, কোলার-ক্যাডমোর ২০, স্যামসন ১৭, পারাগ ৩৬, জুরেল ৮, হেটমায়ার ২৬, পাওয়েল ১৬*, অশ্বিন ০*; স্বপ্নিল ২-০-১৯-০, সিরাজ ৪-০-৩৩-২, দায়াল ৩-০-৩৭-১, ফার্গুসন ৪-০-৩৭-১, কার্ন ২-০-১৯-১, গ্রিন ৪-০-২৮-১)

ফল : রাজস্থান রয়্যালস ৪ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : রবিচন্দ্রন অশ্বিন