হলান্ড–এমবাপ্পেকে দামে ছাড়িয়ে শীর্ষে জুড বেলিংহাম

হলান্ড–এমবাপ্পেকে দামে ছাড়িয়ে শীর্ষে জুড বেলিংহাম

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : কাতার বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছে একঝাঁক তরুণ তুর্কি। যাঁদের কেউ কেউ অবশ্য আগেই ক্লাব ফুটবলে নিজেদের ঝলক দেখিয়েছেন। বিশ্বকাপ দিয়ে নিজেদের মানকে আরও ওপরে তুলেছেন। নতুন বছরের শুরুতে সুইজারল্যান্ডের ফুটবল পরিসংখ্যানভিত্তিক স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্পোর্টস স্টাডিজের (সিআইইএস) করা ফুটবলারদের মূল্য তালিকাতেও দেখা গেছে বিশ্বকাপ পারফরম্যান্সের প্রভাব।

তবে এ তালিকার সবাই যে বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছেন, তা নয়। কেউ কেউ ক্লাব ফুটবলেও আলো ছড়িয়ে দামের তালিকায় নিজের অস্তিত্বের জানান দিয়েছেন। তেমন একজনের নাম আর্লিং হলান্ড। বিশ্বকাপে কোনও ম্যাচ না খেলেও  তালিকার ৫ নম্বরে আছেন এই নরওয়েজীয় তারকা।

বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জেতা কিলিয়ান এমবাপ্পে তালিকার তিনে। সবাইকে ছাড়িয়ে শীর্ষ স্থানে আছেন ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহাম। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে আলো ছড়ানো বেলিংহাম বিশ্বকাপেও মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন।

দামে শীর্ষ দশে যাঁরা :

ফেদেরিকো ভালভার্দে—১২ কোটি ৩৫ লাখ ইউরো :
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গত মৌসুম থেকে আলো ছড়িয়েছে আসছেন ফেদেরিকো ভালভার্দে। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে তাঁর অ্যাসিস্টেই গোল করে ‘লস ব্লাঙ্কোস’দের ট্রফি এনে দেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ভালভার্দের বিশ্বকাপ অভিযানটা অবশ্য ভালো হয়নি। প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয় তাঁর দল উরুগুয়ে। সিআইইএসের তালিকায় ১২ কোটি ৩৫ লাখ মূল্য নিয়ে দশ নম্বরে অবস্থান করছেন ভালভার্দে।

জসকো গাভারদিওল—১২ কোটি ৫৮ লাখ ইউরো :
বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা আবিষ্কারের একজন ক্রোয়াট ডিফেন্ডার জসকো গাভারদিওল। ক্রোয়েশিয়ার সেমিফাইনালে খেলার অন্যতম নায়কও ছিলেন এই আরবি লাইপজিগ ডিফেন্ডার। শেষ চারের ম্যাচে লিওনেল মেসির কাছে ধরাশায়ী হওয়ার সেই মুহূর্তটুকু বাদ দিলে টুর্নামেন্টজুড়ে আলো ছড়িয়েছেন গাভারদিওল। বিশ্বকাপ শেষে তাঁর দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৫৮ লাখ।

জামাল মুসিয়ালা—১৪ কোটি ১ লাখ ইউরো :
বিশ্বকাপে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি জামাল মুসিয়ালা। প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয় তাঁর দল জার্মানি। তবে মাত্র তিন ম্যাচ খেলেও নিজের জাত চিনিয়েছেন মুসিয়ালা। আর বায়ার্ন মিউনিখের ভবিষ্যৎ তারকা হিসেবে নিজের জায়গাও তৈরি করছেন মুসিয়ালা। মূল্য তালিকার ৮ নম্বরে থাকা মুসিয়ালার দাম ১৪ কোটি ১ লাখ ইউরো।

গাভি—১৪ কোটি ৭৬ লাখ ইউরো :
বিশ্বকাপে মিডফিল্ডে স্পেনের ভরসা ছিল ১৮ বছর বয়সী দুই তারকা গাভি ও পেদ্রি। দ্বিতীয় রাউন্ডে মরক্কোর কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার আগ পর্যন্ত নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরেছিলেন গাভি। বার্সেলোনার জার্সিতেও গাভিকে ভাবা হচ্ছে স্প্যানিশ ফুটবলের ভবিষ্যৎ। তাঁর সামর্থ্যের প্রতিফলন ঘটেছে দামেও। গাভির মূল্য ১৪ কোটি ৭৬ লাখ ইউরো।

পেদ্রি—১৭ কোটি ২ লাখ ইউরো :
গাভির পরেই আছেন তাঁর স্প্যানিশ ও বার্সেলোনা সতীর্থ পেদ্রি। মিডফিল্ডে নিজেকে দারুণভাবে প্রমাণ করেছেন এই স্প্যানিশ তারকা। তাঁর দাম এখন ১৭ কোটি ২ লাখ ইউরো।

আর্লিং হলান্ড—১৭ কোটি ৪৯ লাখ ইউরো :
গোল করাকে যেন দুধভাত বানিয়ে ফেলেছেন আর্লিং হলান্ড। চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে এসে একের পর এক রেকর্ডকে পদানত করেছেন এই নরওয়েজীয় তারকা। বিশ্বকাপে খেলা না হলেও তা পুষিয়ে দিচ্ছেন ক্লাব ফুটবলে। গোল করার এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলেও মৌসুম শেষ আরও অনেক রেকর্ড গুঁড়িয়ে দিতে পারেন হলান্ড। মূল্য তালিকার ৫ নম্বরে থাকা হলান্ডের দাম ১৭ কোটি ৪৯ লাখ ইউরো।

ভিনিসিয়ুস জুনিয়র—১৯ কোটি ৫ লাখ :
বিশ্বকাপে ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ফিরলেও আলো ছড়িয়েছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তবে ভিনির আসল রূপ দেখা গিয়েছিল রিয়ালের জার্সিতে। গত মৌসুমেই ‘লস ব্লাঙ্কোস’দের লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন ভিনি। ফাইনালে তাঁর গোলেই লিভারপুলকে হারিয়েছিল রিয়াল। সময়ের অন্যতম সেরা এই তারকা দাম ১৯ কোটি ৫ লাখ।

কিলিয়ান এমবাপ্পে—১৯ কোটি ৭ লাখ :
ভিনিসিয়ুস থেকে সামান্য এগিয়ে থেকে তালিকার ৩ নম্বরে আছেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপে ফাইনালে হ্যাটট্রিক করে আলোড়ন তোলা এমবাপ্পের দাম এখন ১৯ কোটি ৭ লাখ। পিএসজির হয়েও গত মৌসুমে দারুণ ছন্দে ছিলেন এমবাপ্পে। তবে কাছাকাছি গিয়েও টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ আছে গত মাসে ২৪–এ পা দেওয়া এই ফুটবলারের।

ফিল ফোডেন—২০ কোটি ৫ লাখ ইউরো :
ম্যানচেস্টার সিটি ও ইংল্যান্ড—দুই দলের হয়ে নিজেকে মেলে ধরেছেন ফিল ফোডেন। গোল করা এবং করানো—দুটোতেই সমান পারদর্শী। দাম যতই হোক, খুব দ্রুত যে ফোডেনকে ম্যান সিটি ছাড়বে না, তা বলাই যায়। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফোডেনের মূল্য ২০ কোটি ৫ লাখ ইউরো।

জুড বেলিংহাম—২০ কোটি ৮২ লাখ ইউরো :
ইংল্যান্ডে জার্সিতে বিশ্বকাপে দারুণ খেলেছিলেন জুড বেলিংহাম। মাত্র ১৯ বছর বয়সী ডর্টমুন্ডের এই মিডফিল্ডারকে নিয়ে চলছে কাড়াকাড়িও। বলা হচ্ছে, গত এক দশকে তাঁর মানের মিডফিল্ডার আর পায়নি ইংল্যান্ড। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে লিভারপুল, সবাই নাকি তাঁকে দলে টানতে উন্মুখ হয়ে আছে। সিআইএসের মতে তাঁর দাম ২০ কোটি ৮২ লাখ ইউরো।