'বোকাসোকা' মেয়েটিই অলিম্পিকে গড়লেন ইতিহাস

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাঁর ক্যারিয়ারটাই থেমে যেতে বসেছিলো। জীবনও পড়েছিলো হুমকির মুখে। নিতম্বের চোটের চিকিৎসার মাঝেই জানতে পারলেন, ডিম্বাশয়ে ধরা পড়েছে টিউমার! অস্ত্রোপচার করতে হবে। তারপর খেলার জগতে ফিরতে পারবেন কি? শেষ পর্যন্ত তিনি শুধু ফিরলেনই না, তাসমানিয়ার সাঁতারু আরিয়ান টিটমাস প্যারিস অলিম্পিকের ৪শ মিটার ফ্রিস্টাইলে জিতে নিলেন সোনা।

প্যারিস অলিম্পিকে সোনা জয়ের মাধ্যমে অনন্য এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন টিটমাস। প্রায় ১শ বছরের মধ্যে প্রথম নারী হিসেবে টানা দুই অলিম্পিকে ৪শ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে দুই সোনা জয়ের কীর্তি এখন শুধুই তাঁর। অসাধারণ এই অর্জনের পর টিটমাস গণমাধ্যমকে জানালেন, তিনি আগের মতো সেই সাধারণ এবং বোকাসোকা মেয়েটাই আছেন। টানা দুই আসরে সোনা জিতে তাঁর জীবনধারা বদলে যায় নি।

টিটমাসের ভাষায়, ‘আমি আশা করছি, কেউ আমাকে ভিন্নভাবে দেখবেন না—আমি সেই বোকাসোকা তাসমানিয়ান মেয়েটিই আছি, যে কি না এখানে তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে এসেছে। আমি নিজের দিকে তাকাই এবং নিজেকে সাধারণ মনে করি।’

ডিম্বাশয়ের টিউমারের বিরুদ্ধে সেই লড়াই নিয়ে টিটমাস বলেছেন, ‘আমাকে যাঁরা চেনেন এবং বোঝেন, তাঁরা সবাই জানে, মা হওয়ার জন্য আমি জগতের সবকিছু বিসর্জন দিতে পারি। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। আমাকে বলা হয়েছিলো যে এতে (অস্ত্রোপচারে) ঝুঁকি আছে। কারণ, টিউমারটি এতটাই বড় ছিলো যে আমার ডিম্বাশয়ও ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। একজন অ্যাথলেট হিসেবে এটা কঠিন। একজন নারী হিসেবেও এটা কঠিন।’

অস্ত্রোপচারের পর টিটমাস পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যান। পুলে ফেরার পাশাপাশি ডাক্তারদের থেকে আরও একটি সুসংবাদ তিনি পান। মা হতে টিটমাসের আর কোনও বাধা নেই। এরপর গত জুনে অস্ট্রেলিয়ার সুইমিং ট্রায়ালে ২শ মিটার ফ্রিস্টাইলে বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে প্যারিস অলিম্পিকের দলে জায়গা করে নেন। বাকিটা ইতিহাস।