পশ্চিম রেল মেডিক্যালে চাকুরী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

পশ্চিম রেল মেডিক্যালে চাকুরী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ ও ডন; লিয়াকত হোসেন, রাজশাহী : রাজশাহী পশ্চিম রেলওয়ে মেডিক্যালে চাকুরী বিধি লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওেয়েতে ১৯তম গ্রেডের ৪র্থ শ্রেণী পদমর্যাদার চার কর্মচারীকে ১১তম গ্রেডের ২য় শ্রেণীতে অতিরিক্ত কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে করে রেলওয়ের কর্মরত ২য় শ্রেণীর কর্মকর্তাদের মাঝে বৈষম্যর সৃষ্টি হয়েছে। ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণার উদ্দেশ্যে’ লোকবলের সঙ্কট দেখিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য এই কাজটি করেছেন পশ্চিম রেলওয়ের মেডিক্যাল প্রধান (সিএমও) সুজিত কুমার রায়। তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগই উঠেছে।

রেলওয়ের ১১তম গ্রেডের ২য় শ্রেণীর স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন কর আসছেন যথাক্রমে শান্তাহারে কর্মরত ৪র্থ শ্রেণীর ড্রেসার পদের আ. মান্নান, পাকশীতে জমাদার পদের জগবন্ধু বিশ্বাস, খুলনায় কর্মরত জমাদার পদের অয়ন সরকার, ঈশ্বরদীতে কর্মরত জামাদার পদের আকরাম বলে জানা গেছে। ওই চার ব্যক্তি বর্তমানে অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে ২য় শ্রেণীর জ্যেষ্ঠ স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে আছেন।

আরও অভিযোগ পাওয়া গেছে, নিয়ম বহির্ভূতভাবে চাহিদা প্রদান করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালামাল সরবরাহ না নিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

রেল সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী কোনও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী এ পদের অতিরিক্ত দায়িত্বে এসে চাহিদাপত্রে স্বাক্ষর করার এখতিয়ার রাখেন না। যেখানে রেলের অডিটে আপত্তি তোলা যায়। সে আপত্তিকে ম্যানেজ করেই চলছে এই ‘লোপাটের মহোৎসব’। কোনও নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে অনিয়ম ও দুর্নীতির লক্ষ্যে এসব পদে দেওয়া হয়েছে নিয়োগ।

একজন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর থাকা শর্তেও ১৯তম গ্রেডের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে জ্যেষ্ঠ স্যানিটারি পদে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব দেওয়া কতোটা যৌক্তিক; তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এমন অবস্থায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের স্যার সম্বোধন করতে হচ্ছে। কারণ অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া ব্যক্তিরা জ্যেষ্ঠ পদে দায়িত্ব নিয়েছেন।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ২০১৯ সাল থেকে অতিরিক্ত দায়িত্বে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে জগবন্ধু বিশ্বাস পাকশীতে কর্মরত আছেন। ইতোমধ্যে কয়েক কোটি টাকার চাহিদাপত্র দিয়ে চক্রটি বড় অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। একইভাবে আ. মান্নান, আকরাম ও অয়ন সরকারি কোষাগারের টাকা লোপাট করছেন। 

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২রা নভেম্বর ৫ শ পিস বাকেটের চাহিদাপত্রের বিপরীতে মালামাল না নিয়ে বিল উত্তোলন করিয়ে দেওয়া হয়েছে; যাতে টাকাগুলো ভাগাভাগি হয়েছে। এরূপ অনেক চাহিদাপত্র এখন বাঙলার কাগজ ও ডন প্রতিবেদকের হাতে সংরক্ষিত রয়েছে। যাতে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএমও, রাজশাহী বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, আমি ওভার টেলিফোনে কথা বলবো না। কালকে অফিসে আসেন কথা বলবো।

পরে ডিএমও, পাকশী শাকিল আহমেদের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে (সিএমও) চিফ মেডিক্যাল অফিসার সুজিত কুমার রায় বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘আপনি সোমবার অফিসে আসেন অথবা ডিএমও পাকশীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। ঠিকাদারের মালামাল আমরা বুঝে নেই না। এটা তাঁরা (স্যানিটারি ইন্সপেক্টর) বুঝে নেয়। লোকবল সঙ্কটে তাঁদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া আছে।’

জানতে চাইলে জিএম (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, এ বিষয়গুলো আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।