নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ; কুমিল্লা : কুমিল্লা হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের চিকিৎসা আইন বিষয়ের প্রশ্নপত্রের একটি ভুলের দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম। তিনি বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে তাঁর ফেসবুক পেজে এ ক্ষমা চান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে ওই প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই কলেজের অধ্যক্ষ শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
জানা গেছে, কুমিল্লা নগরীর পুরাতন চৌধুরীপাড়ায় অবস্থিত হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। কলেজটির চতুর্থ বর্ষের চিকিৎসা আইন বিষয়ের পরীক্ষা গত বুধবার (২০ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হয়। ওই প্রশ্নপত্রের ৮ নম্বর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নটি ছিলো : ‘সংক্ষেপে লিখ : (ক) ভার্জিনিটি। (খ) ধুতরার বিষক্রিয়া। (গ) গর্ভপাত। (ঘ) হিন্দুদের ধর্মীয় গোড়ামী। (ঙ) যৌন অপরাধ।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বাঙলা কাগজ ও ডনকে জানান, ‘ঘ’ প্রশ্নের বিষয়টি তাঁদের নজরে এলে, তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্বরত শিক্ষকদের অবহিত করেন। এ সময় শিক্ষকেরা বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানান। এরপর শিক্ষকরা ‘ঘ’ প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের নির্দেশ দেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনার শুরু হয়েছে।
এ অবস্থায় পরদিন বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) কলেজটির অধ্যক্ষ তাঁর ফেসবুক পেজে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দিয়েছেন।
এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিনয়ের সাথে জানাচ্ছি যে, গতকাল হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পরীক্ষার চতুর্থ বর্ষের চিকিৎসা আইন বিষয়ের প্রশ্নপত্রে ছাপার ভুলবশত আট নং প্রশ্নের ঘ এ হিন্দুদের ধর্মীয় গোঁড়ামি লেখা হয়েছে। বিষয়টি গতদিন দেখার পর আমি পরীক্ষার্থীদের এই প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি এবং কলেজের নোটিশ বোর্ডে এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এই ছাপার ভুলের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। অধ্যক্ষ, হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ কুমিল্লা।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘চতুর্থ বর্ষের চিকিৎসা আইন বিষয়ের প্রশ্নপত্রের ৮ নং এর ‘ঘ’ প্রশ্নের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দিয়েছি। এটা মুদ্রণজনিত ত্রুটি কি-না দেখা হচ্ছে।’
‘এ ছাড়া এ প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’