প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস : অবশেষে কাজে ফিরলেন চা-শ্রমিকেরা।
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট ও সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় এবং জেলা প্রশাসকদের উদ্যোগে তিন শ টাকা মজুরি দাবি নিয়ে চা বাগানের অচলাবস্থার অবসান হয়েছে। ৯ দিন পর আজ সোমবার (২২ আগস্ট) চা শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন। রোববার রাত ৯টার দিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মাঝে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমঝোতা চুক্তির পাঁচটি শর্ত অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও সম্মান রেখে চা-শ্রমিকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আজ ২২ আগস্ট সকাল থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন। আপাতত চলমান মজুরি ১২০ টাকা বহাল থাকবে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহীর সদয় বিবেচনার পর চূড়ান্তভাবে মজুরি নির্ধারিত হওয়ার দাবি জানান উপস্থিত শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
শারদীয় দুর্গাপূজার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হওয়ার জন্য চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থাপনের আবদার করেছেন। অন্যান্য দাবিগুলো জেলা প্রশাসকের কাছে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ লিখিতভাবে দেবেন। এরপর জেলা প্রশাসক প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার জন্য দাবিগুলো তাঁর কার্যালয়ে পাঠাবেন। আর বাগান মালিকেরা বাগানের প্রচলিত প্রথা অনুসারে ধর্মঘটকালীন মজুরি শ্রমিকদের পরিশোধ করবেন।
জেলা প্রশাসক নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, শ্রম অধিদপ্তর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাহিদুল ইসলাম, চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালেন্দী, বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা, লংলা ভ্যালির সভাপতি শহিদুল ইসলাম, কমল চন্দ্র বোনার্জী, নির্মল দাশ পাইনকাসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গোয়েন্দা দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ। জেলা প্রশাসকসহ উপস্থিত সবার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তর ও শ্রম অধিদপ্তর মহাপরিচালকের কার্যালয়ে ১৬-২০ আগস্ট পর্যন্ত তিন দফা মজুরি নির্ধারণে চা শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ গত ২০ আগস্ট শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠকে সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এমপিসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ও শ্রমিক নেতার উপস্থিতিতে ১৪৫ টাকা দৈনিক মজুরি নির্ধারণ করা হয়। মজুরি নির্ধারণের এক ঘণ্টার মধ্যে নির্ধারণ করা মজুরি প্রত্যাখ্যান করে স্থগিত করা কর্মবিরতি ফের সচলের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। এরপর জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় ফলপ্রসূ হয় সমঝোতা বৈঠক।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর থেকে ফিরে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরির বিষয়ে ঘোষণা দেবেন। এই আশ্বাস পেয়ে তাঁরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিয়েছেন।