দ্য ইকোনমিক টাইমস : বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল।

দ্য ইকোনমিক টাইমস : বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল।

বাসস : ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য ইকোনমিক টাইমসের নিবন্ধে বলা হয়েছে, প্রবাসী আয় ও গার্মেন্ট শিল্পের বৈদেশিক মুদ্রা অর্থনীতির মূল ভিত্তি হওয়ায় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

(উল্লেখ করা যেতে পারে, রেমিট্যান্স আয় সরাসরি রিজার্ভে যোগ হয়। তবে ১ শ ডলারের গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানি করলে, অন্তত ২৫ থেকে ৩০ ডলারের পণ্য আমদানি করতে হয়। সুতরাং গার্মেন্টে রপ্তানি আয় নিট আয় না হলেও তা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ কারণে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশের রিজার্ভে যোগ হচ্ছে; যা দেশটির অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে।)

দ্য ইকোনমিক টাইমস (ইটি)-এর কূটনৈতিক সম্পাদক দীপাঞ্জন রায় চৌধুরী সোমবার (পহেলা আগস্ট) তাঁর পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে বদ্ধপরিকর।’

মহামারির প্রাথমিক পর্যায়ে বলা হয়েছিলো, অনেকে এটি ধরে নিয়েছিলো, অনেক প্রবাসী চাকরি হারানোয় রেমিট্যান্স কমে যাবে। তবে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সফলতার কারণে অনেক বাংলাদেশি বিদেশে তাঁদের নিজ কর্মস্থলে ফিরে গেছে এবং তাঁরা মহামারির আগের হারে টাকা পাঠাচ্ছে।

বিশ্বব্যাংক (ডব্লিউবি) ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২২ সালের বসন্তকালীন বৈঠকে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা ও এর প্রভাব থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সফলভাবে নীতি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে।

ভিশন ২০৪১ নামে বাংলাদেশ নিজেই একটি রোডম্যাপ দিয়েছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে, চরম দারিদ্র্যের অবসান ঘটানো ও ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত হওয়া।

‘বাংলাদেশ বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি করছে’ উল্লেখ করে নিবন্ধে বলা হয়, কৃষি থেকে ফার্মাসিউটিক্যালস এবং জাহাজ নির্মাণ থেকে গার্মেন্ট, দেশের শিল্প ভিত্তি বহুমুখী হচ্ছে এবং এর রপ্তানি বাড়ছে।

বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, কিন্তু অর্থনীতিকে একই সমান গতিতে সচল রাখতে কর্তৃপক্ষ তৎপর রয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান স্থিতিশীল রাখা, বিদেশ থেকে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ওপর নগদ অর্থ পুরস্কার এবং বিলাস দ্রব্যের উপর করারোপ- সবই দেশটির রিজার্ভ তৈরি করতে সাহায্য করছে; যাতে আমদানি চাহিদা সহজেই পূরণ করতে পারছে। এরই মধ্যে সরকারের রপ্তানি আয় বাড়ানো এবং আমদানি কমানোর নীতি অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অনেক বেশি সাহায্য করছে।

সম্প্রতি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলো, তাঁরা এখন নির্মাণ কাজ সমাপ্তিতে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা গত ২৫ জুন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করা এই সড়ক-রেল সেতু (পদ্মা সেতু) উদ্বোধন করেন।