জগন্নাথের পারিশার হাতে মোবাইল ফোন বুঝিয়ে দিলো পুলিশ।

জগন্নাথের পারিশার হাতে মোবাইল ফোন বুঝিয়ে দিলো পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তারের চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করে তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছে তেজগাঁও থানা পুলিশ। পাশাপাশি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ৩ সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো : মো. রিপন ওরফে আকাশ, মো. শফিক ও এক কিশোর।

বুধবার (৩ আগস্ট) সকালে তেজগাঁও থানা ভবনে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত জামান, পিপিএম-সেবা।

তিনি বলেন, গত ২১ জুলাই মাস্টার্সের থিসিসের কাজ শেষে বাসযোগে বাসায় ফিরছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তার। সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের সামনে ট্রাফিক সিগন্যালে বাসটি থেমে যায়। এ সময় এক যুবক বাসের জানালা দিয়ে পারিশার হাতে থাকা পোকো এম সি কালো রঙের মোবাইল ফোনটি টান দিয়ে নিয়ে যায়। পারিশা এ সময় দ্রুত বাস থেকে নেমে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে একজন সন্দেহভাজনকে ধরে ফেলেন। পারিশার পাশে থাকা লোকজন ঘটনাস্থল থেকে আরেকজন সন্দেহভাজনকে আটক করে। পারিশা ও তাঁর পাশের লোকজনের সেই সাহসী ভূমিকার বিষয়টি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এ সংক্রান্তে তেজগাঁও থানায় প্রথমে একটি জিডি পরে মামলা রুজু হয়।

তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ এবং অপরাধীর বিষয়ে পারিশার মৌখিক বর্ণনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক কিশোরকে কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে অস্বীকার করলেও পুলিশের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে ঘটনার সঙ্গে নিজের ও রিপন নামের আরেকজনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে মো. রিপন ওরফে আকাশ অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে ২ দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। চুরি করা মোবাইল ফোনটি ৪ হাজার টাকায় কারওয়ান বাজারের চোরাই মোবাইল ক্রেতা মো. শফিকের নিকট বিক্রি করেছে বলে জানায়। তার দেওয়া তথ্যমতে, কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে চোরাই মোবাইলসহ ক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযুক্তদের মামলার ফিরিস্তি টেনে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, মো. রিপন ওরফে আকাশের নামে বিভিন্ন থানায় ৬টি, জড়িত কিশোরের বিরুদ্ধে ৪টি এবং চোরাই মোবাইল ক্রেতা শফিকের নামে ২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

‘আলোচিত এ ঘটনাটির তদন্ত কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে শেষ করে ১০ দিনের মধ্যে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।

ভিকটিম পারিশা ও তাঁর আশেপাশের লোকজন সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। তবে এ ধরনের অপরাধীদের কাছে ছোটখাটো অস্ত্র থাকে, যাতে ভিকটিম আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জীবনহানীর আশঙ্কা থাকতে পারে। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে অপরাধীদের উপর ঝাপিয়ে পড়লেও সতর্কতা অবলম্বন করার কথা বলেন পুলিশের এ কর্মকর্তা। পাশাপাশি প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।