খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর দাবি : টাইমস স্কয়ার মুখরিত ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে

খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর দাবি : টাইমস স্কয়ার মুখরিত ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে
ডন প্রতিবেদন : জাতীয় শোক দিবসের প্রথম প্রহরে বিলবোর্ডে ভেসে উঠলো বাঙালির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি; নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার প্রকম্পিত হলো ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে। টাইমস স্কয়ারের আইকনিক বলড্রপ বিলবোর্ডে বাঙালি জাতির পিতার জিবন ও কর্মের এ প্রদর্শনি থাকছে ২৪ ঘণ্টা ধরে। তাতে রয়েছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের অংশবিশেষ, বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামি জিবনের নানা মুহূর্তের ছবি আর তাঁর স্মরণীয় উক্তি। বিশ্বজুড়ে পরিচিত এই আলো ঝলমলে টাইমস স্কয়ারের বিলবোর্ড থেকেই ইংরেজি বর্ষবরণের বলড্রপ দেখা যায় প্রতিবছর। বিভিন্ন দেশের লাখো মানুষ এই টাইমস স্কয়ারে জড়ো হন প্রতিদিন। এবার ১৫ আগস্ট বিলবোর্ডজুড়ে তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন স্বাধিন বাংলাদেশের স্থপতির কর্মময় জিবনের গল্প। প্রবাসি বাংলাদেশিরা টাইমস স্কয়ারে সমবেত হয়েছিলেন আগেই। ঘড়ির কাঁটা রাত বারোটায় পৌঁছানোর সঙ্গেসঙ্গে বিলবোর্ডে ভেসে ওঠে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। সমবেতরা সমস্বরে স্লোগান ধরেন। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ি প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। নিউইয়র্কভিত্তিক বিজ্ঞাপনি সংস্থা এনওয়াই ড্রিমস প্রোডাকশন-এর সিইও ফাহিম ফিরোজের উদ্যোগে টাইমস স্কয়ারের এই আয়োজনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসের বির মুক্তিযোদ্ধারাও যোগ দিয়েছেন। জাতীয় শোক দিবসের দিন ২৪ ঘণ্টায় প্রতি ২ মিনিটে ১৫ সেকেন্ড করে পুরো বিলবোর্ডজুড়ে এই প্রদর্শনি হচ্ছে। সবমিলিয়ে ৭২০ বারে মোট ৩ ঘণ্টা চলছে এই প্রদর্শনি। এ আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করা বাংলাদেশের কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও উপস্থিত হন টাইমস স্কয়ারে। প্রথম প্রহরে টাইমস স্কয়ারে সমবেতদের অনেকেই বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে আসেন। যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের একটি ব্যানারে ছিলো বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দণ্ডিত রাশেদ চৌধুরীকে অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে পাঠানোর দাবি। সেই ব্যানারের পেছনে ছিলেন ফোবানার চেয়ারপারসন জাকারিয়া চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়াসহ কর্মকর্তারা। পাশাপাশি নিউইয়র্কে বসবাসরত বির মুক্তিযোদ্ধাসহ সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এবং বঙ্গমাতা পরিষদের নেতাকর্মিরাও ছিলেন সরব। রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম এ উদ্যোগের জন্য এনওয়াই ড্রিমস প্রোডাকশনের সিইও ফাহিম ফিরোজকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আজকের দিনটি শোকের।’ ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ জাতির জনকের দেখানো পথে হাঁটছে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অদম্য গতিতে এগোচ্ছে। তাই আমরা বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শোককে বাঙালি শক্তিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে।’ ‘এভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারলেই ১৫ আগস্টের ঘাতকদের পরাজিত করা সম্ভব হবে এবং এরমধ্য দিয়েই জাতির জনকের আত্মার প্রতি যথাযথ সম্মান জানানো হবে।’ করোনাভাইরাস মহামারির কারণে মুজিববর্ষ এবং স্বাধিনতার সুবর্ণ জয়ন্তি উপলক্ষে তেমন বড় কোনও কর্মসূচি নিতে পারেন নি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসি বাংলাদেশিরা। সে কারণে টাইমস স্কয়ারের এই আয়োজন প্রবাসিদেরমধ্যে বেশ উদ্দিপনার সৃষ্টি করেছে। কর্মসূচি ঘিরে প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মেরমধ্যেও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নতুন ভাবনা তৈরি হবে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন ফোবানার চেয়ারপারসন জাকারিয়া চৌধুরী। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঘাতক রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্যে মার্কিন প্রশাসনকে অনুরোধ করা হচ্ছে। ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন তথা হোয়াইট হাউজ এবং কংগ্রেসে আমরা আরও সোচ্চার হবো, এটাই হচ্ছে আজকের শোক দিবসের সংকল্প।’ সমবেতদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফাহিম ফিরোজ বলেন, ‘উদ্যোগটি সফল করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন, তা বিনয়েরসঙ্গে স্মরণ করছি।’ ‘গণমাধ্যমের আন্তরিক সহায়তার কথাও আমি ভুলবো না।’