ডন প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং টিকা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারই আলোকে এখন খোলার বিষয়ে কর্মসূচি ঠিক করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ১০ শতাংশ বা এর নিচে থাকলে এবং সংশ্লিষ্ট টিকার আওতায় আনা থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে কোনোই বাধা নেই। এক্ষেত্রে বর্তমানে করোনাভাইরাসের শনাক্তের হার ১৫ শতাংশ এবং তা নিম্নমুখি। আবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য পর্যায়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থিদের প্রাধান্য দিয়ে টিকা প্রদান করায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে আমরা বেশ এগিয়ে গিয়েছিই বলছে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে।
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে আজ সোমবার (২৩ আগস্ট) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এর আগে সচিব সভায় নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরসঙ্গে আজও কথা হয়েছে। তাঁরা কর্মসূচি ঠিক করছে- কীভাবে, যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ি, এ ছুটি আছে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। দির্ঘ ১৭ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে দেশের প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থির পড়াশোনা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিকল্প উপায়ে টিভি, অনলাইন, অ্যাসাইনমেন্টসহ বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থিদের সক্রিয় রাখার চেষ্টা করা হলেও বাস্তবতা হলো শ্রেণিকক্ষে যেভাবে পড়াশোনা হতো, তা এসবের মাধ্যমে হচ্ছে না। আবার সবাই এসবের সুবিধাও পাচ্ছে না। আবার শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয় নিয়ে গত বুধবার (১৮ আগস্ট) সচিব সভায়ও বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেই সভায় এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া দরকার। এ বিষয়ে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, স্কুলগুলোও। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। এটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, ঘরে থাকতে থাকতে শিশুদের যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছে। সেদিকে নজর দেওয়া দরকার।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব সেদিন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন- স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম যেনো অনলাইনে বা ডিজিটাল ব্যবস্থায়ও পুরোদমে চলে। পাশাপাশি সুবিধাজনক পরিস্থিতি এলেই যেনো যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। আর ১৮ বছরের বেশি বয়সি সব শিক্ষার্থিকে যেনো দ্রুত টিকার আওতায় আনা হয়।
কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারে, সে বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুটি বিষয় দেখতে বলেছেন। প্রথমত, করোনার পরিস্থিতি এবং দ্বিতীয়ত, টিকা দেওয়া। এ দুটি বিষয় বিবেচনা করে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যবস্থা করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, তাঁদের পরিকল্পনা হলো, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া। পরে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থিদের টিকা দেওয়া প্রায় শেষদিকেই বলেই জানা গেলো।