কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বিদায়ী চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের বিদায়ী চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : সার্টিফিকেট বাণিজ্য চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্ত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) আলী আকবর খানকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে আলী আকবর খানকে আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জিজ্ঞাসাবাদ করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর-রশীদ।

ডিবিপ্রধান বলেন, রবিবার বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ওএসডি করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে ডিবি অফিসে ডাকা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এতে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রেপ্তার করা হবে তাকে। আর এ ঘটনায় যাদের নাম এসেছে, পর্যায়ক্রমে সবাইকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব সামলে আসা আলী আকবর খান ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত শনিবার উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরের রাজউক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে আকবর খানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জাল সনদ, রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র তৈরিতে জড়িত একটি চক্রের সঙ্গে সেহেলা পারভীনের টাকা-পয়সা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই চক্রটি গত কয়েক বছরে ৫ হাজারেরও বেশি জাল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বানিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করেছে।

সেহেলা ছাড়াও এ অভিযোগে এর আগে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। তারা হলো : বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ টি এম শামসুজ্জামান, একই প্রতিষ্ঠানের চাকরিচ্যুত কর্মচারী ফয়সাল হোসেন, গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার, কামরাঙ্গীরচরের হিলফুল ফুযুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা ওরফে মোস্তাফিজুর রহমান এবং যাত্রাবাড়ী এলাকার ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (মেডিক্যাল) পরিচালক মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুন (৪০)। এই পাঁচজনের মধ্যে পুলিশ সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান ও ফয়সাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে গত পহেলা এপ্রিল। আসামিদের দেওয়া তথ্যে কলিকে কুষ্টিয়া সদর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গত ৫ এপ্রিল। পরে এই তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আর সানজিদা আক্তারের জবানবন্দিতে জাল সনদ জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সেহেলার জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে।

গোয়েন্দা পুলিশের ভাষ্য, চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনের সঙ্গে শামসুজ্জামান ও সানজিদা আক্তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও ২৫ থেকে ৩০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।