কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি

কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত সামগ্রিকভাবে বাতিল করে রায় প্রদান করার পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সোমবার (২২ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ প্রজ্ঞাপন জারি করে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এখন থেকে সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নেওয়া হবে। বাকি ৭ শতাংশ নেওয়া হবে কোটায়। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা হয়েছে ৫ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য রাখা হয়েছে ২ শতাংশ।

এর আগে সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে ছাত্ররা যেভাবে চেয়েছেন আদালত সেভাবে রায় দিয়েছেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের আদেশটি সেভাবেই হয়েছে। আমরা সেভাবেই প্রজ্ঞাপন করতে চেয়েছি।’

সরকারকে সংশোধনের যে সুযোগ আপিল বিভাগ দিয়েছেন, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও সংশোধন কিংবা পরিবর্ধন করছি না। হাইকোর্টের রায় যেভাবে আছে, সেভাবেই প্রজ্ঞাপন হবে।’

তিনি বলেন, সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম গ্রেড থেকে শুরু করে অন্যসব চাকরিতে অর্থাৎ ২০তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর করা হবে।

সংরক্ষিত যে ৭ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে, তার মধ্য থেকে যদি কোনও শিক্ষার্থী না থাকেন, তাহলে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আগেও চালু ছিলো। আগে যে কোটা ছিলো, সেখানে যাঁরা বিসিএস ক্যাডারদের আগে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় টিকতে হতো, তাঁর মৌখিক পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হতো। যাঁরা আগে কোটা থেকে আসতেন, তাঁরাও মেধাবী ছিলেন।’

‘তখন কোটায় যদি কেউ সুযোগ না পেতেন, তখন বাকিটা মেধা থেকে নেওয়া হতো। ৩৮তম বিসিএসে ২৮ শতাংশ কোটা থেকে সুযোগ পেয়েছিলেন। বাকিটা মেধা থেকে নেওয়া হয়েছিলো,’ বলেন ফরহাদ হোসেন।

এর আগে, রবিবার (২১ জুলাই) কোটা পুনর্বহাল করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য কোটাপ্রথা হিসেবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ; মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।

গত ৫ জুন কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের পর থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।