মার্কিন নির্বাচন : লড়ছেন না বাইডেন, লড়তে পারেন কমলা হ্যারিস

মার্কিন নির্বাচন : লড়ছেন না বাইডেন, লড়তে পারেন কমলা হ্যারিস

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত। রবিবার (২১ জুলাই) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা করলেন, তিনি নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই বক্তব্য, প্রবল চাপের মুখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাইডেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে শুরু করে ডেমোক্র্যাটদের একটি বড় অংশ চাইছিলো, বাইডেন লড়াই থেকে সরে যান। অন্য কোনও কারণে নয়, তাঁদের সকলেরই বক্তব্য, শারীরিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী নন বাইডেন। বয়সের কারণে তিনি খানিকটা ন্যূব্জ হয়ে পড়েছেন। যার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছিলো, সিএনএন চ্যানেলে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেনের বিতর্কসভায়। বাইডেনের কথা জড়িয়ে যাচ্ছিলো সেখানে।

বাইডেনের সিদ্ধান্ত :
রবিবার (২১ জুলাই) একটি অনলাইন বিবৃতিতে বাইডেন লিখেছেন, 'সকলকে ধন্যবাদ আমায় অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে সাহায্য করার জন্য। আমি দেশের জন্য কাজ করতে পেরে খুশি এবং গর্বিত। দ্বিতীয়বার নির্বাচনে লড়ার জন্য পথে নেমেছিলাম। কিন্তু দল এবং দেশের স্বার্থে সেই রাস্তা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।'

গত বেশ কয়েকসপ্তাহ ধরেই ডেমোক্র্যাট নেতারা বাইডেনের সরে দাঁড়ানো উচিত বলে সওয়াল করছিলেন। সেই পরিস্থিতির মধ্যে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন বাইডেন।

এরপর কী :
বাইডেনের পদত্যাগের পর কমলা হ্যারিস একটি বিবৃতি দিয়েছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত নিতে পারার জন্য বাইডেনকে তিনি সাধুবাদ জানান। বাইডেনের এই পদক্ষেপকে তিনি দেশপ্রেমের সঙ্গে তুলনা করেছেন। একইসঙ্গে হ্যারিস জানিয়েছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর দল তাঁর কথা ভাবছে। তিনি ট্রাম্পকে হারিয়ে সেই আস্থার প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করতে চান।

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা :
ডেমোক্র্যাটদের অনেকেই বলছেন, এবার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নামবেন হ্যারিস। এতোদিন তিনি দেশের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী প্রার্থীর নাম ঘোষণা হবে আগামী আগস্ট মাসে। শিকাগোয় ডেমোক্র্যাটদের কনভেনশনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নাম ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখ্য, প্রাইমারিতে বাইডেন বিপুল সমর্থন পেয়েছিলেন। তার ভিত্তিতেই ডেমোক্র্যাটদের কনভেনশনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে নতুন নেতার নাম ঘোষণা করা হবে। মনে করা হচ্ছে, হ্যারিসকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে। বস্তুত, ডেমোক্র্যাট ফান্ড রাইসিং সংস্থা ইতিমধ্যেই হ্যারিসের নামে অর্থ সংগ্রহ শুরু করে দিয়েছে। যে অর্থ তাঁর নির্বাচনি প্রচারে খরচ হবে।

তবে ওবামা যে বিবৃতি দিয়েছেন, সেখানে হ্যারিসের কথা বলা হয় নি। তিনি বলেছেন, আগামী আগস্টে ডেমোক্র্যাট নেতারা তাঁদের প্রার্থী বাছাই করে নেবেন।

কী বলছেন বিশ্ব নেতারা :
এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বিশ্বের নেতারা বাইডেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেকে জার্মান চ্যান্সেলর- সকলেই বাইডেনের এই সিদ্ধান্তকে সাহসী বলে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে তাঁরা বাইডেনের সুস্থতা কামনা করেছেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং তাঁর স্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বিবৃতি দিয়ে বাইডেনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বাইডেনের প্রশংসা করেছেন।

ক্রেমলিন অবশ্য জানিয়েছে, বাইডেনের সিদ্ধান্তে তাঁরা চিন্তিত। কারণ, বাইডেনের গতিপ্রকৃতি তাঁদের কাছে চেনা ছিলো। নতুন যিনি আসবেন, তাঁকে নতুন করে জানতে হবে।

ডেমোক্র্যাটদের একটি অংশ বাইডেনের এই সিদ্ধান্তে অবশ্য খুশি নয়। নির্বাচনি প্রচারের মাঝপথে প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত ঠিক নয় বলেই মনে করছেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রিপাবলিকানরা ইতিমধ্যেই ট্রাম্পকে পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করেছে।