এক ম্যাগজিন শেষ হলে আরেকটি লাগিয়ে গুলি করেন কনস্টেবল কাওসার

এক ম্যাগজিন শেষ হলে আরেকটি লাগিয়ে গুলি করেন কনস্টেবল কাওসার

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : রাজধানীর বারিধারায় কূটনীতিক এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হককে খুব কাছ থেকে গুলি করেন আরেক কনস্টেবল কাওসার আহমেদ। গুলি করার সময় তার অস্ত্রের একটা ম্যাগাজিন খালি হয়ে গেলে আরেকটি ম্যাগাজিন লাগিয়ে গুলি করেন। 

রাজধানীর বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে পুলিশ সদস্যের গুলিতে আরেক সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় এমন তথ্য জানা গেছে।

পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কনস্টেবল কাউসার আহমেদ সাব মেশিনগান দিয়ে দুটি ম্যাগাজিনের ৩৪ রাউন্ড গুলি চালান। কনস্টেবল মনিরুল ইসলামের দেহ তাতে ঝাঁঝরা হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বাঙলার কাগজকে বলেন, কনস্টেবল কাউসার সাব মেশিনগান এসএমটি-৯ দিয়ে কনস্টেবল মনিরুলের দেহে গুলি করেন। গুলি করার সময় তার অস্ত্রের একটা ম্যাগাজিন খালি হয়ে গেলে আরেকটি ম্যাগাজিন লাগিয়ে তিনি গুলি করেন। 

শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ফিলিস্তিন দূতাবাসের উত্তর পাশের গার্ডরুমের বাইরে ওই ঘটনা ঘটে। এলোপাতাড়ি গুলির মধ্যে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় জাপান দূতাবাসের গাড়ি চালক সাজ্জাদ হোসেন শাহরুখও গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানা গেছে, বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনের পুলিশ বক্সে কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম সাড়ে ৩ মাস এবং কনস্টেবল কাওসার আহমেদ ১ বছর ১০ মাস ধরে কর্মরত ছিলেন।

মনিরুলের লাশের সুরতহাল করেন গুলশান থানার এসআই আব্দুল মান্নাফ। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, টরাস এসএমটি সাবমেশিন গান দিয়ে কাউসার গুলি করেন। তার কাছে দুটি ম্যাগাজিন ছিলো। প্রতিটা ম্যাগাজিনে ৩০টি করে ৬০ রাউন্ড গুলি থাকে। একটা ম্যাগাজিন শেষ হওয়ার পর আরেকটা ম্যাগাজিন অস্ত্রে লাগিয়ে ৮ রাউন্ড গুলি করে। পরের ওই ম্যাগাজিন থেকে ২২ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় যে অস্ত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি ব্রাজিলীয় কোম্পানি টরাস আর্মসের তৈরি। প্রায় ১২ বছর আগে টরাস এসএমটি পুলিশের হাতে আসে। সাধারণ দায়িত্বে এ ধরনের অস্ত্র পুলিশের হাতে দেখা না গেলেও কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশকে আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রও দেওয়া হয়।

ওসি জানান, নিহত মনিরুলের কাছে চায়নিজ রাইফেল ছিলো। সেটা ব্যবহার করা হয় নি। অর্থাৎ, পাল্টা গুলি করার কোনও সুযোগই তিনি পান নি।

এ ঘটনায় এরই মধ্যে কনস্টেবল কাউসারকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে গুলশান থানা পুলিশ। তাকে আদালতে পাঠিয়ে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে ওসি মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন।