আজই শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা

আজই শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা
ডন প্রতিবেদন : আশা-নিরাশার দোলাচলে থাকা মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামীকাল ১৪ নভেম্বর (রবিবার)। পরীক্ষাটি শেষ হবে ২৩ নভেম্বর। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই পরীক্ষা শুরু হলেও করোনাভাইরাসের কথা বলে বাংলাদেশে পাঠদান যেমন দেরিতে শুরু হয়েছে, তেমনি পরীক্ষাও হচ্ছে দেরিতে। অথচ গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কম ছিলো। ওই সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া যেতো বলেই শিক্ষাবিদদের মত। অথচ তা করা হয় নি। আবার গত বছরের ১৭ মার্চ সবকিছু যখন খোলা (দেশে বিধিনিষেধ শুরু হয় ২৬ মার্চ থেকে), ঠিক তখনই অর্থাৎ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের দিন তাঁর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন না করে বন্ধ করে দেওয়া হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জানা গেছে, এবার পুর্নবিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং সংশ্লিষ্ট সকল বিদ্যালয়। এবার মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টার। বিশেষ তিনটি বিষয়ের ওপরই অনুষ্ঠিত হবে ওই পরীক্ষা। এ বিষয়গুলোর ফলাফলের ওপর মূল্যায়ন শেষে অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর যোগ করে ফল প্রকাশ করার কথা রয়েছে। চলতি বছরে মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী। মোট ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এবারের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে মোট ২৯ হাজার ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। সারাদেশে ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি/দাখিল/এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১৮ লাখ ৯৯৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। অন্যদিকে, ৭১০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ৩ লাখ ১ হাজার ৮৮৭ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। ৭৬০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষা দিচ্ছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। এই বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৫১টি। আর কেন্দ্র বেড়েছে ১৬৭টি। এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের গ্রুপভিত্তিক বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিজ্ঞান বিভাগে ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩১ জন, রাজশাহী বোর্ডে ৮১ হাজার ২২৪ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৫৪ হাজার ৫৮৩ জন, যশোর বোর্ডে ৩৭ হাজার ৬০১ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৩১ হাজার ৫৭ জন, বরিশাল বোর্ডে ২৫ হাজার ১১২ জন, সিলেট বোর্ডে ২১ হাজার ৬২৩ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৯ হাজার ৩৬৫ জন এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে ৪১ হাজার ৮৩৫ জন অংশ নিচ্ছেন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৪০ হাজার ৭১২ জন, রাজশাহী বোর্ডে ১১ হাজার ৬১৯ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮০ হাজার ৯৩০ জন, যশোর বোর্ডে ২৬ হাজার ৫৭২ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬৪ হাজার ৭১১ জন, বরিশাল বোর্ডে ২০ হাজার ২২২ জন, সিলেট বোর্ডে ৯ হাজার ৫৫৫ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৪ হাজার ৩৭৫ জন এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে অংশ নিচ্ছেন ১১ হাজার ৩৮৬ জন পরীক্ষার্থী। মানবিক বিভাগে ঢাকা বোর্ডে ২ লাখ ৯৫৭ জন, রাজশাহী বোর্ডে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭২৫ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮৯ হাজার ৩৬১ জন, যশোর বোর্ডে ১ লাখ ১৭ হাজার ১০৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬৫ হাজার ১৫৭ জন, বরিশাল বোর্ডে ৫৯ হাজার ৬৫৬ জন, সিলেট বোর্ডে ৮৯ হাজার ৯৩৩ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ১ লাখ ৯ হাজার ৭০৬ জন এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে অংশ নিচ্ছেন ৭৭ হাজার ৪৮১ জন। সবমিলিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ৬ হাজার ৮৩১ জন, মানবিকে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৫ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮২ জন। এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়ে এনসিটিবির (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরেরসঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।