আওয়ামী লীগের ৩ মেয়াদে পুলিশে ৮৩,৫৭৭ পদ সৃষ্টি : সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের জনবল পর্যাপ্ত না থাকার কারণে সরকারের গত তিন মেয়াদে ৮৩ হাজার ৫৭৭টি পদ বাড়ানো হয়েছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, পুলিশ জনসংখ্যার অনুপাত আগের তুলনায় কমেছে। বিভিন্ন দেশ ও মানদণ্ডের তুলনায় পুলিশের জনবল বাড়ানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সংসদের বৈঠকের প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-৩ আসনের সরকার দলীয় এমপি মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা জানান। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পুলিশের মোট মঞ্জুরীকৃত জনবল ২ লাখ ১৪ হাজার ১৭৬টি (পুলিশ পদ ২ লাখ ৩ হাজার ৩৬৭টি এবং নন-পুলিশ পদ ১০ হাজার ৮০৯টি) । আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের জনবল পর্যাপ্ত না থাকায় বর্তমান সরকার বিগত তিন মেয়াদে ৮৩ হাজার ৫৭৭টি পদ বৃদ্ধি করেছে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ বি এম আনিছুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, পাসপোর্ট অফিসে দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধ ও সেবাপ্রার্থীগণকে সহজে পাসপোর্ট প্রদানের লক্ষ্যে পাসপোর্টের জন্য আবেদন দাখিল, পাসপোর্ট ফি পরিশোধ অনলাইনভিত্তিক করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জনবহুল স্থানে নতুন পাসপোর্ট অফিস স্থাপনের চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছে। পাসপোর্ট এনরোলমেন্ট কার্যক্রম আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে করার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এইচ এম বদিউজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, সকল সংস্থা কর্তৃক সারাদেশে ২০২৩ সালে ৯৭ হাজার ২৪১টি মামলা দায়েরপূর্বক ১ লাখ ২০ হাজার ২৮৭ জন অবৈধ মাদক চোরাকারবারীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বিচারিক আদালতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক সংক্রান্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৮২ হাজার ৫০৭টি।
অপরদিকে ধনী-গরিবের ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্য সরকারের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বহুমাত্রিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন আছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাব পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালামের পক্ষে উত্তর দেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি সত্য যে, উচ্চহারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও উল্লেখযোগ্য হারে দারিদ্র্য কমলেও আয়-বৈষম্য হ্রাস সময়সাপেক্ষ বিষয়। বিবিএসের সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুসারে, ২০২২ সালে আয়-বৈষম্য জিনি সহগ এর মান ০-৪৯৯। তবে ভোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশে বৈষম্য ০:৩০-০.৩২ এ স্থিত হয়ে আছে, যা আয় বৈষম্যের প্রভাব লাঘব করেছে। অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, ভোগ ব্যয়-বৈষম্য পরিমাপে অধিকতর নির্ভরযোগ্য। আয়-বৈষম্য মূলত বাজার অর্থনীতিরই একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, যার মূলে রয়েছে সম্পদ ও মানব পুঁজির অসম বণ্টন। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির সুবিধা সকল জনগোষ্ঠীর মাঝে সমানভাবে বণ্টন নিশ্চিত করা গেলে আয়-বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব। সরকার দারিদ্র্য ও আয়-বৈষম্য দূরীকরণে যথেষ্ট আন্তরিক। সরকারের সকল দীর্ঘ ও মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা উন্নয়ন কৌশলের ভিত্তিমূলে রয়েছে অন্তর্ভুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
নাটোর-২ আসনের সরকার দলীয় এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রীর পক্ষে আইনমন্ত্রী জানান, জনগণের নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অধুনিকায়ন, সুষ্ঠু ও মানসম্মত বিদুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে দেশের মেট্রোপলিটন এলাকাসহ অন্যান্য এলাকায় মাটির নিচ দিয়ে অর্থাৎ ভূ-গর্ভস্থ লাইন ও ভূ-গর্ভস্থ সাবস্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের কাজ চলমান আছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা/কোম্পানিগুলো কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৭৪২ দশমিক ৭০ কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।