৫৪তম স্বাধীনতা দিবসের জন্য প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

৫৪তম স্বাধীনতা দিবসের জন্য প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে পুরোপুরি প্রস্তুত সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। প্রায় একমাস ধরে সৌধ এলাকায় চলা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সৌধ এলাকা। এদিকে এবার স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভুটানের রাজার আগমন উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কথা জানিয়েছে জেলা পুলিশ।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা গেছে, গণপূর্ত বিভাগের শতাধিক কর্মীর নিরলস পরিশ্রমে সবুজে ঘেরা ১০৮ হেক্টর জমির ওপর নির্মিত স্মৃতিসৌধ এলাকাটি যেনো নতুন রূপ পেয়েছে। ধুয়েমুছে পরিপাটি করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ চত্বরের প্রতিটি স্থাপনা ও হাঁটার পথ। লাল ইটে সাদা রঙের শুভ্রতায় নান্দনিক হয়ে উঠেছে পুরো সৌধ এলাকা।

স্মৃতিসৌধ চত্বরের চারপাশের টবে শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের রঙিন ফুল আর পাতা বাহারের গাছ। লেকগুলোতে ফুটেছে লাল শাপলা। ইতোমধ্যেই নিরাপত্তার জন্য ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, উচ্চমাত্রার সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজও শেষ হয়েছে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে কাজ করা আব্দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে স্মৃতিসৌধকে সুন্দর করে তোলার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কেউ ধোয়ামোছা, কেউ গাছপালা ছাঁটা, লেক সংস্কার, রং করা, আলোকবাতি ও সিসিটিভি লাগানোসহ নানা কাজ করছেন। এখন কাজ শেষ পর্যায়ে। আমরা সৌধের বিভিন্ন স্থানে হরেক রকম ফুল ও পাতা বাহার গাছের টব বসিয়েছি। অনেক জায়গায় বিভিন্ন রকম ফুল লাগানো হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের দিন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। তাই আমরাও স্মৃতিসৌধকে সুন্দর করে তুলতে অক্লান্তভাবে কাজ করছি।

আরেক কর্মী জানান, আমরা স্মৃতিসৌধের বেদি পর্যন্ত হাঁটার সবগুলো পথে লাল ইটে সাদা রং দিচ্ছি, যাতে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমরা এই কাজ করছি। এ ছাড়া ল্যাম্প পোস্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও কাঠের তৈরি জিনিসপত্রে রং করে সুন্দর করা হচ্ছে যাতে সবার ভালো লাগে। এই কাজ করতে পেরে আমাদের অনেক ভালো লাগে এবং গর্ববোধ করি।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, মহান স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরাসহ লাখো মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এজন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধকে প্রায় একমাস সাজানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজের জন্য স্মৃতিসৌধ এলাকায় জনসাধারণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পরেই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সৌধ এলাকা।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও দেশি-বিদেশি কূটনীতিকসহ সর্বসাধারণের আগমন উপলক্ষে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এবার ভুটানের রাজার আগমনকে ঘিরে গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি ড্রোন দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

আর ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে সার্বিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে বলেও জানান তিনি।