হোসি কুনিও হত্যায় জেএমবির ৪ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড বহাল।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ : রংপুরে জাপানি নাগরিক হোসি কুনিও হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) চার সদস্যের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। অপর একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) এই রায় দেন।
হাইকোর্ট যে চারজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন, তাঁরা হলো জেএমবির পীরগাছার আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রী, জেএমবি সদস্য লিটন মিয়া ওরফে রফিক, সাখাওয়াত হোসেন ও আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব। খালাস পেয়েছেন ইছাহাক আলী। তাদের মধ্যে আহসান উল্লাহ আনসারী পলাতক। অপর চার আসামি কারাগারে।
২০১৫ সালে কুনিওকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় করা মামলায় ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুরের বিশেষ জজ আদালত রায় দেন। বিচারিক আদালতের রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিলো।
আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আসে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
অন্যদিকে, বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কারাগারে থাকা চার আসামি ২০১৭ সালে পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত রায়ের জন্য আজকের দিন রাখেন।
হাইকোর্টে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলো আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ ও মো. শামসুল ইসলাম। পলাতক এক আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলো রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. হাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাকির হোসেন মাসুদ।
রায়ের পর সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাকির হোসেন মাসুদ বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘ইছাহাককে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।’
জাপানি নাগরিক কুনিও ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন। তিনি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারি গ্রামে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে উন্নত মানের ঘাসের চাষ করতেন। ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর এই গ্রামে ৬৬ বছর বয়সী কুনিওকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার দিনই কাউনিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ৩ জুলাই জেএমবির আট সদস্যের বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ১৫ নভেম্বর সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।