‘হাওয়া’র বিরুদ্ধে মামলা : নাট্য সংগঠনে ক্ষোভ।

‘হাওয়া’র বিরুদ্ধে মামলা : নাট্য সংগঠনে ক্ষোভ।

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : ‘হাওয়া’ সিনেমাটি একের পর এক আইনি জটিলতায় পড়ছে। আর এটা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে টেলিভিশন নাট্য সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ। ‘হাওয়া’র বিরুদ্ধে মামলা ও প্রদর্শন বন্ধের আইনি নোটিশের ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে তাঁরা।

তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র যখন কয়েকজন তরুণ, মেধাবী, শিক্ষিত শিল্পী, নির্মাতার হাত ধরে ধ্বংসস্তূপ থেকে আবার নতুনভাবে একটু একটু করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শুরু করেছে, আবার যখন সিনেমা হলে মানুষের জোয়ার নেমেছে, মানুষ দলে দলে সিনেমা দেখতে আসছে, ঠিক তখনি এ জোয়ার বন্ধ করার ষড়যন্ত্র নিয়ে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এই অশুভ শক্তি বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য জঘন্যতম তৎপরতা চালিয়ে আসছে।

‘হাওয়া’ সিনেমায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ লঙ্ঘন প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, নাটক চলচ্চিত্র নির্মাণে কখনোই শিল্পী নির্মাতারা পশু-পাখি প্রাণী হত্যা ও নির্যাতন করেন না। গল্পের প্রয়োজনেই কখনো কখনো পশু-পাখিদের দেখানো হয়ে থাকে। যা ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রে ঘটেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জেলেরা গভীর সমুদ্রে হারিয়ে গেলে পাখি ছেড়ে দিয়ে দেখেন কাছাকাছি কোনও স্থলভূমি আছে কিনা। যা এই চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে। এটি জীবনেরই অংশ। এবং চলচ্চিত্রে ঘোষণাই দেওয়া হয়েছে, এখানে কোনও বন্যপ্রাণীর ক্ষতিসাধন করা হয় নি। জন্মলগ্ন থেকে আমরা বিভিন্ন নাটক চলচ্চিত্রে দেখে আসছি এমন কতো দৃশ্য সেগুলো নিয়ে আপত্তি উঠলো না কেনো!

সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম বলেন, সরকার নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রযোজিত ভীষণ জনপ্রিয় নাটক ‘বহুব্রীহি’র সেই খাঁচায় বন্দি টিয়া পাখির ‘তুই রাজাকার’ সংলাপ এখনো আমাদের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে।

এমন হাজারও ঘটনায় কর্তৃপক্ষ তখন কোথায় ছিলো? এ ঘটনায় চলচ্চিত্রের প্রযোজক, পরিচালককে ডেকে কথা বলা যেতো। আইন লঙ্ঘন হয়ে থাকলে কীভাবে তা শোধরানো যায়, সেই আলোচনা ও পদক্ষেপ নেওয়া যেতো। তা না করে ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বন্ধের জন্য আইনি তলব এসবই আমাদের শিল্প সংস্কৃতির কণ্ঠ রুদ্ধ করার, শিল্প সাহিত্য চর্চাকে নিরুৎসাহিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবেই আমরা দেখছি।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত ছবি ‘হাওয়া’। চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত ও মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ছবিটি ঘিরে পরিবেশবাদীরা বলছেন, সিনেমাটিতে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় প্রদর্শন ও হত্যা করে খাওয়ার চিত্র দেখানো হয়েছে। এতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন হয়েছে উল্লেখ করে ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শন বন্ধের দাবি জানায় পরিবেশবাদী ৩৩টি সংগঠন। পাশাপাশি মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার মামলাও হয়েছে।