সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় : সশস্ত্র বাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী

সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় : সশস্ত্র বাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : যে কোনও দুর্যোগ এবং বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌম অক্ষুণ্ণ রাখতে সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত স্পষ্ট। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যে পররাষ্ট্রনীতি আমাদের দিয়ে গেছেন- ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরীতা নয়। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করবো না। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই চলবো। তবে আমাদের একটা স্বাধীন দেশ। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি থাকতে হবে।”

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে নৌবাহিনীর মিডশিপম্যান এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার-বি (ডিইও) ব্যাচের শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক করে গড়ে তোলার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি কখনো খোদা না করুক, বহিশত্রুর আক্রমণ হয়, সেটা যেন আমরা প্রতিহত করতে পারি। আর যে কোনো যুদ্ধে যেন জয়ী হতে পারি, সেভাবে আমাদের নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী সব বাহিনী; অর্থাৎ সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন, আধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে আমি প্রতিষ্ঠিত করতে চাই এবং প্রশিক্ষণকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিই।”

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, “সততা, নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগে বলীয়ান হয়ে সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় তোমাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। শৃঙ্খলাবোধ ও কর্তব্য নিষ্ঠা, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশমাতৃকার দায়িত্ব পালন করতে হবে।

“আজ ‘মিডশিপম্যান ২০২০ আলফা ব্যাচ’ এবং ‘ডাইরেক্ট এন্ট্রি ২০২২ ব্রাভো ব্যাচ’-এর ৪১ জন তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণ শেষে কর্মজীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছ। দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে তোমরাই আমাদের নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি।”

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, “এই বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে আমরা প্রতিষ্ঠা করব। ৪১ সালে বাংলাদেশের জনগণ হবে প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন। ডিজিটাল ডিভাইসে শিক্ষা নিয়ে তারা প্রত্যেকে প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। আমাদের অর্থনীতি, যে কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, সব কিছু আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিয়ে যাব। বাংলাদেশ হবে স্মার্ট উন্নত বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশ জাতির পিতা চেয়েছিলেন- ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।”

এর আগে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল তাকে স্বাগত জানান।

সদ্য কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে মিডশিপম্যান ২০২০/এ ব্যাচের মিডশিপম্যান শাহীদ আবেদীন আকিফ সেরা চৌকস মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ পান।

এ ছাড়া মিডশিপম্যান এ এইচ এম মাহমুদুন নবী প্রশিক্ষণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণ পদক’ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২২/বি ব্যাচ হতে অ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট আল রেদুয়ান মাজরু শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণ পদক’ লাভ করেন।