স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা : ১৭ বছর পর ৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা : ১৭ বছর পর ৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলার কাগজ ও ডন; নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার ১৭ বছর পর চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষাণা করেন।

মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন : কামরুল, রবিউল, আলী আকবর ও শুক্কুর আলী।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবউদ্দিন আহমেদ জানান, যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছেন রবিউলের মা ডলি বেগম। রায় ঘোষণার সময় রবিউল ও তাঁর মা আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন না; দুজনই পলাতক রয়েছেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০৫ সালের ৩ জুন ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের লক্ষ্মীনগর গ্রামের ধইঞ্চাক্ষেত থেকে নিপার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিনই নিপার বাবা ফতুল্লার চর রাজাপুর এলাকার রঙমিস্ত্রি আক্তার হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন।

ফতুল্লার স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী নিপার বয়স তখন ছিলো ১১ বছর। তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ২৬ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর নিপাকে হত্যা করে আসামিরা। মামলার দুই আসামি রবিউল ও কামরুল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয়।

মামলার বাদী, এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১৭ জন সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে ১৭ বছর পর এ মামলার রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় নিহতের বাবা আক্তার হোসেন বাঙলার কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে নিপা ছিলো বড়। আমার বোন মারা যাওয়ায় তাঁর বাড়িতে কুলখানির দাওয়াতে পাঠাইছিলাম। পরদিন সকাল থেকে মাইয়া নিখোঁজ ছিলো। অনেক খোঁজাখুজির পর বাড়ির পাশের ক্ষেত থেইকা মাইয়ার লাশ পাই৷’

তিনি আরও বলেন, ‘মামলার পিছনে ১৭ বছর আদালতের বারান্দায় ঘুরছি, আমার জীবনডাই শ্যাষ। এতো বছর পর রায় হইছে। গ্রামের সকলেও চাইছিলো আসামিগুলার ফাঁসি হউক। এই রায়ে আমি খুশি। চাই তাড়াতাড়ি রায় কার্যকর হউক।’