শিনজো আবে’র অবদানের কথা স্মরণ প্রধানমন্ত্রীর।

শিনজো আবে’র অবদানের কথা স্মরণ প্রধানমন্ত্রীর।

বাসস : প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বাংলাদেশের উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রেখেছেন।

শিনজো আবের মৃত্যুতে সোমবার (২৫ জুলাই) মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্বকালে বলেন, জাপানের উন্নয়ন পরিচালনার পাশাপাশি বাংলাদেশের উন্নয়নে তিনি (শিনজো আবে) সব সময় পাশে ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বাসভবন গণভবন থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।

তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প যেমন মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং গভীর সমুদ্র বন্দর, মেট্রোরেল এবং ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে শিনজো আবের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি (আবে) পদ্মা সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডি এবং রূপসা সেতু নির্মাণেও বাংলাদেশকে সহায়তা করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে হলি আর্টিজান হামলার ফলে জাপান ও ইতালীয় নাগরিকদের মৃত্যুর পর জাপান সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত মেট্রোরেল অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর কাজ অব্যাহত রাখতে আবে সাহসী ভূমিকা পালন করে গেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় অনেকের ধারণা ছিলো, জাপান যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে, সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

‘সেই সময় আবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, যে, বাংলাদেশের প্রয়োজনে তিনি সবসময় পাশে থাকবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সন্ত্রাসী হামলার পর অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে সক্ষম হয়।

তিনি বলেন, আবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন করেছেন এবং তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পেতে সহায়তা করেছেন।

‘কাজেই, বাংলাদেশের আজকের উন্নয়নে তাঁর (শিনজো আবে) একটি মহান ভূমিকা রয়েছে। আমরা তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত এবং মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছি,’ তিনি বলেন।

তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ একদিনের শোক দিবসও পালন করেছে, যোগ করেন তিনি।

এটি সত্যিই একটি দুঃখের দিন, কারণ, জাপানের মতো একটি জায়গায় এমন জঘন্য কাজ হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না, তার হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন হবে কিনা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপানের মতো দেশে এমন জঘন্য কাজ হতে পারে, তা তাঁরা ভাবতেও পারেন নি।

‘আমরা বুঝতে পারি নি কেনো তাঁর মতো একজন ব্যক্তির ওপর হামলা চালানো হলো। তিনি একজন ভালো মানুষ, সংবেদনশীল, দেশপ্রেমিক এবং সত্যিকারের রাজনীতিক ছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান সরকার (এবং কিছু উন্নয়ন অংশীদার)ও যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণে সহায়তা করেছিলো। কারণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে প্রথম জাপান সফরে মুক্তিযুদ্ধের পর তাঁদের কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছিলেন, সেতু নির্মাণে।

‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে জাপানের প্রতিটি সরকারই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।’