ডন প্রতিবেদক, এ কে এম কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ : নওগাঁর মান্দার সতিহাট কে টি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের কক্ষে মাদক সেবন করতে না দেওয়ায় শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানা গেছে। আর বিষয়টির ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান মন্ডল বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার (১০ অক্টোবর) ওই প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে শনিবার (৯ অক্টোবর) রাতে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে জিলাপি ভাজার কাজ চলছিলো।
এ সময় আনুমানিক রাত ১০টার দিকে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের এনামুল হকের ছেলে সুইট হোসেন (৩০), মামুন হোসেনের ছেলে মিঠু (২৮) ও খাতামুল ইসলামের ভাগিনা রিমন (২৯) (প্রাক্তন ছাত্র) মাদক সেবনের জন্য একটি কক্ষ খুলে নিতে চায়। কক্ষ খুলে দিতে না চাইলে তারা হুমকি প্রদান করে চলে যায়। এ ঘটনার জের ধরে পরেরদিন সকালে প্রতিষ্ঠানের ভেতর অনধিকার প্রবেশ করে গাছের ডাল দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সহায়ক সাইফুল ইসলামকে (৩০) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার এক পর্যায়ে হত্যার উদ্দেশে মাথায় আঘাত করে এবং এলোপাথারিভাবে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোলাজখম করে। তাঁকে বাঁচানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান এগিয়ে গেলে তাঁকেও শারীরিকভাবে হেনস্তা করে। এরপর প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে মারপিট করার জন্য উদ্ধত হলে প্রাণভয়ে তিনি দৌঁড়ে অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর তারা অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকিধামকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অফিস সহায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার আগেরদিন রাতে প্রতিষ্ঠানে এসএসসি শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের জন্য জিলাপি ভাজার জন্য আমরা কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ প্রতিষ্ঠানে ছিলাম। এ সময় অভিযুক্তরা মাদকদ্রব্য সেবনের জন্য আসলে আমি তাদের বাধা দিই।
‘এ কারণে পরদিন সকালে তারা অতর্কিতভাবে প্রতিষ্ঠানে এসে আমাকে আক্রমণ করে মারপিট করে। এ সময় আমার সহকর্মীরা আমাকে রক্ষা করে।’
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারীকে মারপিট করার সময় আমি তাঁকে রক্ষা করতে গেলে তাঁরা আমাকেও শারীরিকভাবে হেনস্তা করে।
বিষয়টির ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান মন্ডল বলেন, প্রাক্তন ছাত্রসহ বহিরাগতরা আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের মারপিট করার সময় আমি এগিয়ে গেলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারতে উদ্ধত হলে প্রাণভয়ে আমি অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিই। তখন তারা বাহিরে থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরপর আমি আমার সহকর্মীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সকলের পরামর্শক্রমে থানায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করি।
এ ব্যাপারে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান মন্ডল বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
‘তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা যায় নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’