রাজশাহীতে কবরস্থানের জমি জাল দলিলে ৫৫ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ।

রাজশাহীতে কবরস্থানের জমি জাল দলিলে ৫৫ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ।

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঙলা কাগজ; লিয়াকত হোসেন, রাজশাহী : রাজশাহীর উপকণ্ঠ কাটাখালী পালপাড়া সংলগ্ন এলাকায় জাল দলিলের মাধ্যমে কবরস্থানের জমি বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। যেখানে কাটাখালি পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আসাদ, অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা আসগর ও কয়েকজনের যোগসাজশে এই অপকর্মটি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর পবা উপজেলার কাপাসিয়া মৌজার আরএস দাগ নম্বর- ৩০৬ জমির পরিমাণ- ০.০৯০০ একর কবরস্থানের নামে দান করে যান আঙ্গুরা বিবি নামে একজন নারী। কিন্তু ওই দানকৃত জমির উপরে নজর পড়ে পাশের টাঙ্গন এলাকার কাটাখালী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আসাদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা আজগর আলীর।

এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, আজগর আলী ইতিমধ্যেই তাঁর স্ত্রী বিউটি আজগরের নামে একটি ভুয়া দলিল তৈরি করে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে ওই জমির শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য ২০১৮ সালে একবার গোপনে পবা উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করেন, যার প্রমাণ সাংবাদিকের নিকট গচ্ছিত আছে।পরে অবশ্য ভূমি অফিস সরেজমিনে দেখে তা খারিজ করে দেয়। 

জানা গেছে, প্রায় ৪৮ বছর আগে খতিয়ান নম্বর- ১৫২ , দাগ নম্বর- ৩০৬ জমির পরিমাণ- ৯ শতাংশ কবরস্থান থাকা ওই জমির মালিক ছিলেন আবেদ আলী ও উজির আলি। পরে ওয়ারিশ সূত্রে আরএস খতিয়ানমূলে এই জায়গার মালিকানা পান আঙ্গুরা বিবি। এরপর তিনি কবরস্থানের নামে জায়গাটি দান করে দেন।

জানা গেছে, কাটাখালীর পালপাড়া সংলগ্ন এলাকার কবরস্থানের এই ৯ শতাংশ জমিকে ভিটা হিসেবে দেখিয়ে ৫৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন আজগর আলী। ইতোমধ্যে এই জমির বায়নাস্বরূপ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সাবেক কাটাখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদের কাছে থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।  

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবেক কাউন্সিলর আসাদ ২০ লাখ টাকা বায়নার কথা স্বীকার করে বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘হ্যাঁ আজগরের সঙ্গে আমার ২০ লাখ টাকা বায়না চুক্তি হয়েছে। জমি যে অবস্থায় আছে, সেই অবস্থাতেই ৫৫ লাখ টাকা মূল্যে ক্রয় করেছি।’

‘জায়গাটি কবরস্থান, বিষয়টি আপনার কি জানা নেই?’ এমন প্রশ্নে তিনি দাবি করেন, বিষয়টি তাঁর জানা ছিলো না।

কবরস্থান বিক্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে আজগর আলী বাঙলা কাগজ ও ডনের কাছে দাবি করে বলেন, ‘বিষয়টি মোটেও সত্য না।’ পাশাপাশি তিনি দাবি করে বলেন, কবরস্থান বিক্রির জন্য তিনি কাউন্সিলর আসাদের কাছ থেকে কোনও ধরনের অর্থ নেন নি।

এ বিষয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লসমী চাকমা সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, বিষয়টি সাব রেজিস্ট্রারের বিষয়। তবে এ বিষয়ে যদি কেউ অভিযোগ দেয়, তবে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

তখন ‘বাঙলা কাগজ ও ডন তাঁকে এ বিষয় জানালো এবং এটিও একটি অভিযোগ’- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’