যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ফখরুজ্জামান গ্রেপ্তার

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ফখরুজ্জামান গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলার কাগজ ও ডন : মানবতাবিরোধী অপরাধে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. ফখরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ গোড়ান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এটিইউ’র পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) আসলাম খান জানান, ২০১৫ সালের ১৯ মে ত্রিশালের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে ও  মো. ফখরুজ্জামানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

মামলায় বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন শান্তি কমিটির ময়মনসিংহ শহর শাখার আহ্বায়ক এম এ হান্নানের নির্দেশে পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের দোসররা ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক মানুষকে হত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুট, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করেন। বিচারক মামলার এজাহার গ্রহণ করে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

তিনি জানান, ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ-১ পরোয়ানা জারি করেন। পরে আসামি হান্নানকে গুলশানের বাড়ি থেকে এবং ছেলে রফিক সাজ্জাদকে গুলশান এলাকায় তার অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় অপর আসামি মো. ফখরুজ্জামান ও ছাব্বির পলাতক ছিলেন।

এটিইউ’র এই কর্মকর্তা জানান, ২০১৬ সালের ১১ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর মো. হরমুজ আলী, মো. আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রাব্বানী, খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ ও মো. ফখরুজ্জামানসহ আটজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্যে এম এ হান্নান, তার ছেলে রফিক সাজ্জাত ও মিজানুর রহমান মিন্টু মৃত্যুবরণ করেন। 

এটিইউ’র সহকারী পুলিশ সুপার ওয়াহিদা পারভীন জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে তিন সদস্যের বেঞ্চ ময়মনসিংহের গোলকীবাড়ী বাইলেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে হত্যা ও লাশ গুমের অপরাধে ফখরুজ্জমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ভিন্ন ভিন্ন অপরাধে অন্য আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। গ্রেপ্তার যুদ্ধাপরাধী ফখরুজ্জামানকে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।