মেজর সিনহা রাশেদ হত্যাসহ দুর্নীতি : প্রদীপের ২০ বছর ও তাঁর স্ত্রীর ২১ বছরের কারাদণ্ড।

মেজর সিনহা রাশেদ হত্যাসহ দুর্নীতি : প্রদীপের ২০ বছর ও তাঁর স্ত্রীর ২১ বছরের কারাদণ্ড।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঙলা কাগজ; চট্টগ্রাম : অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি কারনের দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। বুধবার (২৭ জুলাই) ঘোষিত রায়ে প্রদীপ কুমার দাশকে ২০ বছর এবং তাঁর স্ত্রী চুমকি কারনকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন এবং অর্থপাচারের দায়ে কয়েকটি ধারা মিলিয়ে এ দণ্ডাদেশ দেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ। রায়ে তাঁদের অবৈধভাবে সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দেন আদালত। প্রদীপ কুমার দাশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় ফাঁসির আসামি। 

এর আগে গত ১৭ জুলাই প্রদীপ-চুমকি দম্পতির বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালত। প্রদীপ দম্পতির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন আদালত। ওইদিন আদালতে প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকিও উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ ডিসেম্বর প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। প্রদীপ কারাগারে থাকলেও তাঁর স্ত্রী চুমকি তখন পলাতক ছিলেন। গত ২৩ মে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

২০২০ সালের ২৩ আগস্ট তাঁদের বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন পাথরঘাটায় ৬ তলা বাড়ি, ষোলশহরে বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে চুমকির নামে।

তাঁদের ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। ফলে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পায় দুদক। 

এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এ ব্যবসার কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি।

এদিকে ২০২১ সালের ২৬ জুলাই প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলায় ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জন সাক্ষ্য দেন।