মেঘনা ও গোমতি সেতুর ফাস্ট ট্র্যাক : কখনো টোল কাটে না, কখনো কাটে ৩-৪ বার।

মেঘনা ও গোমতি সেতুর ফাস্ট ট্র্যাক : কখনো টোল কাটে না, কখনো কাটে ৩-৪ বার।
নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঙলা কাগজ : সরকার প্রচুর অর্থ খরচ করে সড়ক, মহাসড়ক ও সেতু নির্মাণ করে। যেখানে অধিক পরিমাণে অর্থের প্রয়োজন পড়ে, সেখানে টোল বসানো হয়। এক্ষেত্রে নির্মাণ ব্যয় বেশি হলে, সড়কে যেমন টোল বসে; তেমনি প্রায় সকল বড় সেতুতেই টোল বসানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের এই আমলে দুটি ব্রিজের ফাস্ট ট্র্যাকের টোল এখনও নেওয়া হচ্ছে সেই এনালগ পদ্ধতিতেই। নামে ফাস্ট ট্র্যাক হলেও, টোলগুলোতে এখনও আসে নি ডিজিটালের ছোঁয়া। এমন অবস্থায় এই দুটো সেতুর ফাস্ট ট্র্যাকের টোল মাঝেমধ্যে নেওয়াই হয় না; আবার কখনো টাকা কাটা হয় ৩-৪ বার। সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লার দাউদকান্দিতে গোমতি সেতুর ফাস্ট ট্র্যাক লেনে গাড়ি থামানোর জন্য অবরোধক দেওয়া রয়েছে। সেখানে গিয়ে কয়েকবার হর্ন দেওয়ার পর এক ব্যক্তি এসে অবরোধক সরিয়ে দেন এবং ওয়্যারলেসে নম্বরটি ফাস্ট ট্র্যাকের বুথে বলেন। তখন ফাস্ট ট্র্যাকের বুথ থেকে টাকা কাটা হয়, আর গাড়ি যেতে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে গাড়ি যাতে যেতে না পারে, সেজন্য টোলের বুথের সামনের প্রতিবন্ধকটি এখানে প্রায়ই তোলা হয় না। তবে প্রতিবন্ধকটি ছোট থাকার কারণে গাড়িকে একটু পাশ হয়ে চলে যেতে হয়। এক্ষেত্রে বুথের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির দায়িত্বহীনতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এই ট্র্যাকটি থেকে একই গাড়ির টাকা কিছু সময় অন্তর অন্তর ৪ বার কাটার অভিযোগও রয়েছে। সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, মেঘনা সেতুর টোল প্লাজায় থাকা ফাস্ট ট্র্যাকের লেনটির বুথের সামনে এলে সাধারণ ট্র্যাকের ন্যায়ই সময় নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে সাধারণ লেনে গাড়ি থেকে টাকা নিয়ে গাড়ি ছাড়া হয়, আর এখানে নম্বর দেখে দেখে সেটি টাইপ করা হয়, এরপর টাকা কাটার পর সেটির প্রতিবন্ধক তোলে গাড়ি ছাড়া হয়। এমন অবস্থায় সাধারণ লেনের মতো কয়েকটি গাড়ি হয়ে গেলে, এই লেনটিতেও জ্যামের সৃষ্টি হতো। এক্ষেত্রে আবার এই লেনটিতে মাঝেমধ্যে কোনও কর্মচারীই থাকেন না। ফলে কিছু সময় টোলের টাকাই কাটা হয় না। তখন বাধ্য হয়েই গাড়িচালককে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে হয়। এ ব্যাপারে গাড়িচালক হাফিজুর রহমান বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে একটি সেতু করে, আর সেই সেতুর টাকা যদি সঠিকভাবে না পায়, তাহলে সেটি খুবই দুঃখজনক। আর টাকা তোলার ক্ষেত্রে ফাস্ট ট্র্যাককে ডিজিটাল করা সময়ের দাবি। যেখানে ক্যামেরা থাকবে, এবং ক্যামেরা নম্বরপ্লেট থেকে নম্বর নিয়েই সঙ্গে সঙ্গেই টাকা কেটে নেবে। ‘এটি করতে তো বেশি সময় বা খরচের প্রয়োজন পড়ে না। শুধু প্রয়োজন সদিচ্ছার।’ ‘আর এটি করা হলে ট্র্যাকটিতে ১ জন বা ২ জন করে কোনও কর্মচারী রাখারও প্রয়োজন নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ফাস্ট ট্র্যাকগুলো ডিজিটাল করে দিলে যেমন টাকা ৩-৪ বার টাকা কাটার সুযোগ নেই; আবার টাকা না কেটে গাড়ি ছেড়ে দেওয়ারও সুযোগ নেই।’ ‘ফাস্ট ট্র্যাক মানেই তো ফাস্ট। এখানে গাড়ি থামবে না; দ্রুতগতিতে চলে যাবে। এটাই তো নিয়ম।’ এ ব্যাপারে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এবং এই সেতু দুটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সবুজ উদ্দিন খান বাঙলা কাগজ ও ডনকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে এর আগে কেউ কোনও তথ্য দেয় নি। আর আপনি বিষয়টি আমাদেরকে জানানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বিষয়টির ব্যাপারে দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’